পাকিস্তানে তালেবানের হামলায় ১৬ সেনা নিহত
পাকিস্তানের তালেবান গোষ্ঠী শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছে একটি সেনা চৌকিতে রাতভর হামলা চালানোর দাবি করেছে। দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের হামলায় ১৬ সেনা নিহত এবং আরও পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছে। খবর এএফপির।
একজন জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, মধ্যরাতের পর থেকে আক্রমণ শুরু করে জঙ্গিরা, যা প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয়। প্রায় ৩০ জন জঙ্গি তিন দিক থেকে পাহাড়ি এলাকার ওই সেনা চৌকিতে আক্রমণ করে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘জঙ্গিদের আক্রমণে ১৬ জন সৈন্য শহীদ হয়েছেন এবং পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা ওয়্যারলেস যোগাযোগ সরঞ্জাম, নথি ও অন্যান্য মালামালে আগুন দিয়েছে।’
আফগান সীমান্ত থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মাকেন এলাকার ওই চৌকিতে হামলায় হতাহতের এই সংখ্যা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
তালেবানের পাকিস্তানের শাখা এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করে বলেছে, ‘এটি আমাদের জ্যেষ্ঠ কমান্ডারদের শাহাদাতের প্রতিশোধ হিসেবে করা হয়েছে।’ জঙ্গি গোষ্ঠীটি মেশিনগান ও একটি নাইট ভিশন ডিভাইসসহ বেশকিছু সামরিক সরঞ্জামের মজুত লুট করে নিয়ে গেছে বলেও দাবি করেছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এ ঘটনায় এখনও কোনো বিবৃতি দেয়নি।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তে জঙ্গি তৎপরতার পুনরুত্থান ঘটে। কাবুলের শাসকদের বিরুদ্ধে সীমান্তের ওপার থেকে পাকিস্তানে হামলা চালানো জঙ্গিদের মূলোৎপাটন করতে ব্যর্থতার অভিযোগ করেছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের তালেবানরা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামে পরিচিত। তাদের আফগান সহযোগীদের সঙ্গে তারা একই ধরনের মতাদর্শ ধারণ করে, যারা তিন বছর আগে ক্ষমতায় ফিরেছে।
কাবুলের নতুন শাসকরা আফগান মাটি থেকে বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে উচ্ছেদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু জুলাই মাসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, সেখানে প্রায় ছয় হাজার ৫০০ টিটিপি যোদ্ধা রয়েছে। তালেবানরা টিটিপিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আফগান তালেবানরা অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণের অনুমতিসহ টিটিপির অপারেশনে সমর্থন দেয় এবং সহনশীলতা দেখায়।
জঙ্গি হামলা বৃদ্ধিতে ইসলামাবাদ-কাবুল সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। গত বছর কয়েক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণ দেখিয়ে হাজার হাজার অবৈধ আফগান অভিবাসীকে উচ্ছেদ করে পাকিস্তান।