তামিলনাড়ুর ‘আম্মার’ মৃত্যুর খবর, হাসপাতালের অস্বীকার
ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা মারা গেছেন বলে স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলের খবরে বলা হয়েছে। চেন্নাইয়ে তাঁর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে দেখা যাচ্ছে।
জয়া টিভিসহ তামিলনাড়ুর অন্তত তিনটি টিভি চ্যানেল সংবাদ দিয়েছে, অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জয়ললিতা মারা গেছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, চিকিৎসকরা এখনো তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
তামিলনাড়ুর ছয়বারের মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার বয়স ৬৮ বছর। নিজের দলের নেতাকর্মী এবং রাজ্যের অনেক মানুষ তাঁকে ‘আম্মা’ বলে সম্বোধন করে থাকেন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, রোববার মুমূর্ষু অবস্থায় জয়ললিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আজ বিকেলেই হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তাঁর অবস্থা ‘অত্যন্ত গুরুতর’।
২০১৪ সাল থেকে জয়ললিতা উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র ব্যবহার করতে হয়।
জয়ললিতা ১৯৪৮ সালে কর্ণাটকের মেলুকটে এক তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র তারকা ছিলেন। তামিল, কানাড়া, তেলেগু এবং হিন্দিভাষায় তিনি তিনশোরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
জয়ললিতার নেতৃত্বাধীন দলের নাম অল ইন্ডিয়া আন্না দ্রাবিঢ়া মুন্নেত্রা কাঝাগাম। ইংরেজিতে বলা হয় অল ইন্ডিয়া আন্না দ্রাবিড়িয়ান প্রগ্রেস ফেডারেশন। ভারতে দলটি আন্না ডিএমকে নামে পরিচিত। রাজ্য ভিত্তিক দল হলেও আন্না ডিএমকে ভারতের পার্লামেন্টে তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল।
১৯৭২ সালে দ্রাবিঢ়া মুন্নেত্রা কাঝাগাম (ডিএমকে) ভেঙে নতুন রাজনৈতিক দল আন্না ডিএমকে গঠন করেন জি রামাচন্দ্রন। এখনো তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে ওই দুই দলই প্রভাবশালী। ডিএমকে দলের নেতৃত্বে আছে করুনানিধি।
রামাচন্দ্রন নিজেও চলচ্চিত্র জগতের মানুষ ছিলেন। ১৯৮২ সালে আন্না ডিএমকে দলে যোগদেন জয়ললিতা। হয়ে যান রামাচন্দ্রনের অন্যতম রাজনৈতিক শিষ্য। ১৯৮৭ সালে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রামাচন্দ্রন মারা যান। ১৯৮৯ সালে দলের শীর্ষপদে চলে আসেন জয়ললিতা। ১৯৯১ সালে রাজ্যে দলকে ক্ষমতাসীন করেন তিনি। তিনি ভারতের দ্বিতীয় নারী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
প্রতিপক্ষ করুণানিধির সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা, রাজনৈতিক বিতর্ক অনেক কিছুই জড়িয়ে আছে জয়ললিতার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনে। কিন্তু তামিল জনগোষ্ঠীই তাঁকে ‘আম্মা’ নামটি দিয়েছে। তামিলনাড়ুর আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার কাছে জয়ললিতা কেবলই ‘আম্মা।’ বাঙালিদের মত তামিলরাও মাকে আম্মাই বলে।