২০০ মানুষকে ফেরতে সম্মত বাংলাদেশ-মিয়ানমার
উদ্ধার করা ২০০ ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিয়ানমারের সমঝোতা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। গত সপ্তাহে মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা থেকে ওই বাংলাদেশিদের উদ্ধার করা হয়।
মিয়ানমারের সরকার পরিচালিত দৈনিক গ্লোবাল নিউ লাইট পত্রিকার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল সোমবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক হয়। আবার মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এভাবে দুই দেশের মধ্যে উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অভিবাসী সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। মিয়ানমার সরকারের দমন-পীড়ন থেকে জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গা মুসলমানরা দেশ ছাড়ছে। আর দারিদ্র্য থেকে মুক্তি ও উন্নত জীবনের আশায় দেশ ছাড়ছেন বাংলাদেশিরা। এই রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিরা মানবপাচারকারীদের শিকার হচ্ছেন।
চলতি মাসের শুরুতে থাইল্যান্ডে গণকবর পাওয়ার পর পাচারকারী ও জিম্মি ব্যবসায়ীদের ধরপাকড় শুরু হয়। এরপর থাইল্যান্ডে পৌঁছানোর পরিবর্তে খোলা সাগরে অনেক নৌকায় ধারণক্ষমতার বেশি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেলে পালিয়ে যায় পাচারকারীরা। জাতিসংঘ জানিয়েছে, সাড়ে তিন হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে খোলা সাগরে ফেলে যাওয়া হয়।
মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত শুক্রবার দেশটির রাখাইন প্রদেশের সমুদ্রসীমা থেকে ২০০ বাংলাদেশিসহ ২০৮ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশি ছাড়া অপর আটজনকে রাখাইন প্রদেশের ‘বাঙালি’ বলে উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষ।
মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ বলে। তাদের দাবি, এরা বাংলাদেশ থেকে এসেছে। রাখাইন প্রদেশের ১১ লাখ রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলমানকে নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। নিজ দেশেই বর্ণবৈষম্যের শিকার এই রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রের সব ধরনের সুবিধাবঞ্চিত অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে। আর ২০১২ সালে বৌদ্ধ উগ্রপন্থীদের হামলার পর প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সম্প্রতি নৌকার মানুষ নিয়ে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করা হলেও রোহিঙ্গাদের প্রতি দেশটির সরকারের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।