কৃষ্ণ সাগর শস্য চুক্তিতে ফিরতে রাশিয়ার সাত শর্ত
রাশিয়া জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় শস্য চুক্তিতে পুনরায় যোগ দিতে প্রস্তুত। তবে, ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোকে তাদের বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করতে হবে। শুক্রবার (২১ জুলাই) জাতিসংঘে মস্কোর উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি এ কথা জানান। খবর আরটির।
কৃষ্ণ সাগর শস্য চুক্তি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ব্রিফিংয়ে দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, ‘শস্য চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে কারো অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, মস্কোর অভিযোগের সুরাহা করতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
এই কূটনীতিক জোর দিয়ে বলেন, ‘রাশিয়া বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহের জন্য শস্য চুক্তির গুরুত্ব স্বীকার করে। এতে ফিরে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতেও প্রস্তুত, তবে শুধু... যদি রাশিয়ার চুক্তিতে অংশগ্রহণের জন্য আগেই সম্মত হওয়া নীতিগুলো সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ এবং আপত্তি ছাড়াই বাস্তবায়ন করা হয়।’
শর্তের তালিকা তুলে ধরে পলিয়ানস্কি জোর দিয়ে বলেন, ‘শুধু কথায় নয়, বাস্তবিক অর্থেই রাশিয়ার শস্য ও সার বিশ্ব বাজারে রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং এ খাত সংশ্লিষ্ট সব বাধা অপসারণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সুইফট পেমেন্ট সিস্টেমে রাশিয়াকে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
এই কূটনীতিক বলেন, ‘রাশিয়ায় আবারও কৃষি যন্ত্রপাতির খুচরা যন্ত্রাংশ ও উপাদানের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। রাশিয়ার মালবাহী জাহাজ ও খাদ্য রপ্তানির বিমা সংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
আরও শর্ত তুলে ধরে পলিয়ানস্কি বলেন, ‘রাশিয়ার সার উপকরণ রপ্তানি সম্প্রসারণে কোনো বাধা থাকতে পারবে না। গত মাসে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত টগলিয়াত্তি-ওডেসা অ্যামোনিয়া পাইপলাইনও সংস্কার করতে হবে। এছাড়া কৃষি খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাশিয়ার সব সম্পত্তি নিষেধাজ্ঞা মুক্ত করতে হবে।’
সপ্তম ও সর্বশেষ শর্ত তুলে ধরে রাশিয়ার এই কূটনীতিক বলেন, ‘শস্য চুক্তির প্রাথমিক মানবিক উদ্দেশ্য পুনরুদ্ধার করতে হবে, অর্থাৎ ধনী দেশগুলোকে আরও ধনী করার পরিবর্তে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য সমস্যা দূর করতে এ চুক্তি কাজে লাগাতে হবে।’
মস্কো সোমবার (১৭ জুলাই) শস্য চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই ব্যবস্থাকে ‘একতরফা খেলা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। রাশিয়ার দীর্ঘদিনের দাবিগুলোর কোনোটিই পূরণ হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এই পদক্ষেপের পরে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের বন্দরে যেকোনো জাহাজ চলাচল করলে সেটি ‘সম্ভাব্য সামরিক পণ্যবাহী হিসেবে বিবেচনা করা হবে’।
জবাবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মস্কোর বিরুদ্ধে কৃষ্ণ সাগরকে একটি ‘বিপজ্জনক অঞ্চলে’ পরিণত করার অভিযোগ তুলেছে। একইসঙ্গে রাশিয়ার জন্য নির্ধারিত এলাকায়ও সব জাহাজের জন্য একই রকম হুঁশিয়ারি দেয় দেশটি।