ইমরান খানের পতনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত, ওয়াশিংটনের প্রত্যাখ্যান
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/08/10/imraan_khaan.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে ইন্টারসেপ্টের এক তথ্যে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ছিলেন আজ আলোচনায়। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হারানোর পেছনে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের হাত। একটি তারবার্তা ফাঁস হয়েছে দাবি করে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ইউক্রেন যুদ্ধে পাকিস্তানের নিরপেক্ষতায় রুষ্ট হয়ে সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে এক বৈঠকে তাদের অবস্থানের কথা জানায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খান, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দুজন কর্মকর্তা। তাদের একজন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ‘গোপনীয়’ তারবার্তাটি দি ইন্টারসেপ্টকে সরবরাহ করে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি সূত্র। যদিও এই সব তথ্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে ওয়াশিংটন। বলেছে, ‘এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।’
ইন্টারসেপ্টের প্রতিবেদন বলছে, সূত্রটি জানায়, তাদের সঙ্গে ইমরানের দল বা দলটির নেতার কোনো যোগসূত্র নেই। তারবার্তাটি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ইমরান সরকারের পররাষ্ট্রনীতির ঘোর বিরোধী ছিল। এ ছাড়া ইমরানের মস্কো সফরেও দেশটি নড়েচড়ে বসে। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের নিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখে চলে যায় বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটেও আলোচনা হয়।
গোপন বৈঠকে ডোনাল্ড লু সরাসরি বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং কাউন্সিল জানিয়েছে যে, রাশিয়ার পক্ষ অবলম্বন করাই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতির অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
এরপর ডোনাল্ড লু ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি এটাও জানান, পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে না এলে পশ্চিমা মিত্রদের নিয়ে পাকিস্তানকে একঘরে করে তোলা হবে।
এদিকে, সম্প্রতি ইমরান খানকে গ্রেপ্তার, তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করাসহ তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর ঘটনাগুলো ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে আসছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড লুর ওই গোপন বৈঠকের মাস খানেক পরেই আস্থা ভোটে হেরে যান ইমরান খান। ধারণা করা হয়, এর পেছনে হাত ছিল দেশটির সেনাবাহিনীর।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2023/08/10/imraan_khaan_inaar.jpg)
ইমরান খান অবশ্য আগে থেকেই ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রে’র বিষয়ে তার সমর্থকদের কিছুটা ধারণা দিয়েছিলেন বিভিন্ন সমাবেশে তার বক্তৃতার মাধ্যমে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ইন্টারসেপ্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে অস্বীকার করে বলেছে যে, তাদের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু পাকিস্তান সরকারকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সরিয়ে দিতে কোনো প্রস্তাব দেননি। এ বিষয়ে ইমরান খানের অভিযোগের পর ২০২২ সালের ৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জালিনা পোর্টার বলেন, ‘এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।’
এ বিষয়ে গত জুন মাসে ইমরান খান আবারও অভিযোগ তুললে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও তাদের আগের অবস্থানের কথা জানায়। তারা আরও জানায়, এগুলো নিছক প্রচারণা, ভুল তথ্য এবং তথ্যের কোনো সত্যতা নেই।