ট্রাম্পের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য হুমকিতে
নাগরিক জালিয়াতির একটি মামলায় নিউইয়র্কের আদালতে হাজির হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই মামলায় ট্রাম্পের দুই ছেলেও আসামি হিসেবে রয়েছে। মামলাটির শুনানি এমন এক সময়ে শুরু হলো যখন কি-না হোয়াইট হাউজের লড়াইয়ের দিকে মনোনিবেশ করছেন ট্রাম্প। খবর এএফপির।
আজ সোমবার (২ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, নিউইয়র্কের বিচারক আর্থুর এনগোরোন ইতোমধ্যে ট্রাম্প পরিবারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। বছরের বছরের ধরে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক মূল্যের বিষয়টি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানোর অভিযোগে সাবেক প্রেসিডেন্ট, তার ছেলে এরিক ও ডন জুনিয়রকে অভিযুক্ত করেছেন।
ট্রাম্পের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২৫ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করতে চাইছেন নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিটিয়া জেমস। পাশাপাশি পারিবারিক ব্যবসা থেকে ট্রাম্প ও তার ছেলেদের অপসারণ চাইছেন এই আইনজীবী। জেমস আজ সাবেক প্রেসিডেন্টকে বার বার জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন এবং বলেছেন, ‘ন্যায়বিচার হবে।’ অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘আপনি যতই শক্তিশালী হন না কেন বা আপনার কাছে যতই অর্থ থাকুক না কেন, আপনি আইনের ঊর্ধ্বে নন।’
এদিকে, আজ আদালতে হাজির হয়ে ট্রাম্প মামলাটিকে স্ক্যাম ও জাদুকরী বলে অভিহিত করেছেন। ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্প বলেন, ‘মামলাটি ভুল। আমার আর্থিক বিবৃতি অসাধারণ।’
এএফপি বলছে, এই দেওয়ানী মামলা ছাড়াও ট্রাম্প সামনের মাসগুলোতে বেশ কয়েকটি বড় ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হবেন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগে আগামী ৪ মার্চ ওয়াশিংটনে ফেডারেল বিচারকের সামনে হাজির হতে হবে ট্রাম্পকে। এরপরেই নিউইয়র্কের আদালতে হাজির হতে হবে সাবেক প্রেসিডেন্টকে। এরপরে আবার হাজির হতে হবে ফ্লোরিডার আদালতে। সবশেষ তাকে জর্জিয়ায় রাষ্ট্রীয় অভিযোগের জবাব দিতে হবে।
নিউইয়র্কের আদালতে ট্রাম্প পরিবারের বিরুদ্ধে হওয়া দেওয়ানী মামলার রায়ে বিচারক এনগোরোন লেখেন, ট্রাম্পের দুই বড় ছেলে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর সংগ্রহাকদের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আর্থিক বিবরণীতে ঋণদানকারী ও বিমাকারীদের ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সম্পত্তির মূল্য ৮১২ মিলিয়ন ডলার থেকে ফুলেফেঁপে দুই দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যান।
ফলস্বরূপ, বিচারক ট্রাম্পর বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িখ লাইসেন্স প্রত্যাহার করেছে। এসব লাইসেন্স ট্রাম্প সংস্থাকে নিউইয়র্কের কিছু সম্পত্তি পরিচালনার অনুমতি দেয়।
সাবেক প্রেসিডেন্ট এমন পরিস্থিতি নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের ব্যবসায়িক আইনের অধ্যাপক উইল থমাস বলেন, ‘জরিমানা হলে একটি বড় ধাক্কা খাবেন ট্রাম্প। নিউইয়র্কে তার ব্যবসা করার ক্ষমতা কমে যাবে।’
অ্যাটর্নি জেনারেল জেমসের মতে, ট্রাম্প নিজের অ্যাপার্টমেন্টের সাইজ নিয়েও জালিয়াতি করেছেন। প্রকৃত সাইজের চেয়ে তিনগুণ বড় হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া ম্যানহাটনের ৪০ ওয়াল স্ট্রিটে থাকা ভবনের মূল্য ২০০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বেশি দেখিয়েছেন তিনি।