ইন্দোনেশিয়ার সৈকতে আটকা পড়েছে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে একটি সমুদ্র সৈকতে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নাগরিক আটকা পড়েছেন। বেশিরভাগ নারী ও শিশুর এই দলটি সৈকতে পৌঁছানোর পর দেশটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রহণ না করায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। খবর এএফপির।
২০১৫ সালে নিজেদের দেশে নিপীড়নের মুখে রোহিঙ্গারা দেশ ছাড়তে শুরু করার পর গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় দিনগত রাত ৩টায় ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে পৌঁছানো এই দলটি সবচেয়ে বড়।
২০১৭ সালে মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সামরিক বাহিনীর দমনপীড়ন শুরু হলে প্রায় ১০ লাখ লোক বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। রোহিঙ্গা নাগরিকদের ওপর এই দমন-পীড়নের বিষয়টিকে ঘিরে গণহত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের তদন্তও চলছে। প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোহিঙ্গা নাগরিক তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথে দীর্ঘ ও ব্যবয়বহুল যাত্রায় মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের পিডি সামজিক সাহায্য সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, এসব রোহিঙ্গা নাগরিকদের অবতরণ কেন্দ্রে রাখা হবে। এবার সরকার কোনো খরচ বহন করবে না বলেও জানান তিনি।
মুসলিম নামের ওই ব্যক্তি আরও জানান, স্থানীয় সরকার এইসব শরণার্থীর জন্য তাঁবু ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনা দায়দায়িত্ব নেবে না।
দীর্ঘ সাগর ভ্রমণে ক্লান্ত এসব রোহিঙ্গা নাগরিকদের অনেকেই তীরে পৌঁছে সাগরের সৈকতেই শুয়ে পড়েন। এ সময় অনেক মাকে তাদের সন্তানকে বুকে আগলে রাখতে দেখা যায়।
মুসলিম বলেন, ‘এই মুহূর্তে তাদের আশ্রয় দেওয়ার মতো কোনো জায়গা আমাদের কাছে নেই।’
এদিকে গতমাসে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক ওই এলাকায় পৌঁছানোর পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও সেখানকার অধিবাসীরা আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে নারাজ। গত বুধবার আচেহ প্রদেশের সাবাং দ্বীপে থাকা রোহিঙ্গা নাগরিকদের অন্যত্র স্থানান্তরের দাবিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন প্রায় ১৫০ বিক্ষোভকারী।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) জানান, এসব শরণার্থীদের সাময়িকভাবে কিছু সাহায্যপণ্য দেওয়া হবে। তিনি দেশটিতে ক্রমশ বাড়তে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই ঢলের জন্য মানবপাচারকারীদের দায়ী করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
ইন্দোনেশিয়া জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। যে কারণে দেশটি মিয়ানমার থেকে আসা এসব শরণার্থীকে গ্রহণ করতে বাধ্য নয় বলে জানিয়েছে।