৪৮ বছর কারাভোগের পর প্রমাণিত হলো তিনি নির্দোষ
হত্যা মামলার সাজায় দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন তিনি। তবে, প্রায় চার যুগ পর আদালত জানাল কারাগারে থাকা ব্যক্তি নির্দোষ। ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটির ওকলাহোমার একজন বিচারক ওই ব্যক্তিকে নির্দোষ বলে রায় দিয়েছেন। আর এতেই ওই ব্যক্তি মার্কিন ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। কারণ, দেশটির ইতিহাসে অন্যায় না করেও দীর্ঘদিন সাজা ভোগ করা ব্যক্তি তিনিই প্রথম। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, বিনা দোষে সাজা খাটা ওই ব্যক্তির নাম, গ্লেন সিমন্স (৭০)। গত জুলাইয়ে জেল থেকে বের হন সিমন্স। ওই সময় ডিস্ট্রিক্ট আদালত থেকে বলা হয়, মামলাটিতে বাদীপক্ষের আইনজীবী তথ্য-প্রমাণ উত্থাপন করতে পারেনি। আর গত সোমবার ডিস্ট্রিক্ট আদালতে অ্যাটর্নি বলেন, মামলাটির নতুন বিচারের জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই। এরপরেই গত মঙ্গলবার বিচারক অ্যামি পালুম্বু সিমন্সকে নির্দোষ বলে রায় দেন।
রায়ে বিচারক বলেন, ‘সিমন্সকে যে অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, সাজা দেওয়া হয়েছে এবং কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে; তিনি সে অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এই আদালত সুস্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের মাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।’
রায়ের পর গণমাধ্যমে সিমন্স বলেন, ‘এমনটা ঘটতে পারে না তা কেউ আপনাকে বলবে না। সত্যিই এমনটা যে কারও সঙ্গে হতে পারে। এটি স্থিতিস্থাপকতা ও দৃঢ়তার একটি পাঠ।’
বিবিসি জানিয়েছে, ৪৮ বছর এক মাস ১৮ দিন কারাগারে ছিলেন সিমন্স। ১৯৭৪ সালে ওকলাহোমার শহরতলীতে একটি মদের দোকানে ডাকাতির সময় ক্যারোলিন সু রজার্সকে হত্যার অভিযোগে তিনি এই সাজা খেটেছেন। গ্রেপ্তার হওয়ার সময় সিমন্সের বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। এ সময় সিমন্সের সঙ্গে গ্রেপ্তার হন ডন রবার্টস নামে আরেকজন। ১৯৭৫ সালে হত্যার অভিযোগে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পরে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেয়।
গ্রেপ্তারের পর থেকেই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে আসছেন সিমন্স। তার মতে, হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি তার বাড়িতে ছিলেন।
বিবিসি বলছে, এক কিশোরের সাক্ষ্যের কারণে দোষী সাব্যস্ত হন সিমন্স ও রবার্টস। ঘটনার সময় ওই কিশোরের মাথার পেছনে গুলি লাগে। ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি অফ এক্সোনেশনস বলেছে, পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ওই কিশোর আরও বেশ কয়েকজন পুরুষের দিকে ইঙ্গিত করেছিল। তবে, পরে নিজের কিছু সাক্ষ্যের বিরোধিতা করেছিল তিনি।
সাজা পাওয়া রবার্টস ২০০৮ সালে প্যারলে মুক্তি পান। ওকলাহোমাতে বিনা দোষে সাজাপ্রাপ্তরা এক লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি ক্ষতিপূরণ পাবেন।