ইমরানকে জেলে রেখে পাকিস্তানে নির্বাচন আজ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/02/08/paakistaan_thaamb.jpg)
সহিংস সংঘাতে প্রাণহানি, দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা ইমরান খানকে জেলে রেখে এবং ভোট পূর্ববর্তী নানান অনিয়মের অভিযোগের মধ্যেই আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাধারণ নির্বাচন।
ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতাকর্মীদের ওপর সামরিক বাহিনীর মদদপুষ্ট সরকারের দমন-পীড়নের কারণে নিষ্প্রভ নির্বাচনি প্রচারণার পর ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটারের ভোট দেওয়ার কথা থাকলেও ভোটার উপস্থিতি বেশ কম হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। খবর এএফপির।
আজকের নির্বাচনে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) অধিকাংশ আসন পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাদের আশীর্বাদ নিয়েই ৭৪ বছর বয়সী নওয়াজ শরীফ জয়লাভ করতে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গতকাল বুধবার পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অফিসগুলোতে দুটি বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ২৮ জন নিহত এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হন। কয়েক ঘণ্টা পর ইসলামিক স্টেট এ হামলার দায় স্বীকার করে।
তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলেছে, সহিংসতা এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকর বলেছেন, সংঘাত সৃষ্টির যেকোনো প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দেওয়া হবে।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/02/08/paakistaan_inaar.jpg)
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে আজ বৃহস্পতিবার ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে দেশটির সীমান্ত বন্ধ রাখা হবে।
নির্বাচন উপলক্ষে পাকিস্তানজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশের সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি সদস্যকে। দেশটির ৯০ হাজার ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৪ কোটি এবং এটি বিশ্বের পঞ্চম জনবহুল দেশ।
প্রায় ১৮ হাজার প্রার্থী দেশটির জাতীয় পরিষদ ও চারটি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হতে নির্বাচনে লড়ছেন।
নির্বাচন বিশ্লেষণ বিষয়ক সংগঠন গ্যালপ পাকিস্তানের নির্বাহী পরিচালক বিলাল জিলানি বলেন, পাকিস্তানের নির্বাচনের ইতিহাস ভোট কারচুপি ও রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগে পূর্ণ। ২০১৮ সালেও এরকম ঘটনা ঘটেছিল। এটা এক ধরনের ‘ম্যানেজ করা গণতন্ত্র’, যা সামরিক বাহিনী চালায়।
এই নির্বাচনে পিটিআইয়ের নির্বাচনি প্রতীক (ক্রিকেট ব্যাট) বাতিল করা হয়। পাশাপাশি ব্যালট পেপার থেকেও তাদের প্রতীক সরিয়ে ফেলা হয়। দলটির নেতাদের বাধ্য করা হয় স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে। এ ছাড়া পিটিআই প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে রাষ্ট্রদ্রোহ, দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বিয়ে করার জন্য দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পিএমএল-এন নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন না পেলেও দলটির প্রধান নওয়াজ শরীফ এই নির্বাচনের পর পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে কোয়ালিশন করে ক্ষমতায় আসতে মুখিয়ে আছেন। বিলাওয়াল ভুট্টো ও আসিফ আলি জারদারির নেতৃত্বাধীন পিপিপি পারিবারিক রাজনীতির আরেকটি অনন্য উদাহরণ।
তবে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত এই দেশটির অর্থনীতি এখন ভঙ্গুরপ্রায়। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্থান-পতনের রাজনীতিতে জর্জরিত দেশটির সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে নিস্পৃহ ভাব।