হাইতির অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরির পদত্যাগ
হাইতিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমবর্ধমান চাপ ও সহিংসতার মুখে দেশটির অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেছেন। ক্যারিবীয় দেশগুলোর জোট ক্যারিকমের প্রধান ও গায়ানার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইরফান আলী এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।
হাইতিতে রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল সোমবার (১১ মার্চ) জ্যামাইকায় আঞ্চলিক নেতারা মিলিত হওয়ার পরই এ তথ্য সামনে এলো।
সশস্ত্র গ্যাং সদস্যদের বাধায় বাড়ি ফিরতে না পেরে হেনরি এখন পুয়ের্তো রিকোতে আটকা পড়েছেন। ২০২১ সালের জুলাইয়ে হাইতির সাবেক প্রেসিডেন্ট খুন হওয়ার পর থেকে তিনি দেশটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।
জ্যামাইকার রাজধানী কিংস্টনে বৈঠকের পর ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির (ক্যারিকম) চেয়ারম্যান ও গায়ানার প্রেসিডেন্ট ইরফান আলী বলেন, ‘আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল গঠন এবং অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম ঠিক করতে তার (এরিয়েল হেনরি) পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করছি।’
অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের সড়কগুলো নিয়ন্ত্রণ করেছে ভারী অস্ত্রধারী গ্যাংগুলো।
হেনরি যখন সহিংসতা মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে কেনিয়ায় ছিলেন, তখন গ্যাংদের একটি জোট পুলিশ স্টেশনে এবং হাইতির দুটি বড় কারাগারে হামলা চালায়। হাইতির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্রমাগত হামলার মধ্যে হেনরিকে বহনকারী প্লেন অবতরণ করতে পারেনি।
কিংস্টনের আলোচনায় অংশ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, এরিয়েল হেনরি হাইতিতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি তা করতে হলে, আগে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও হাইতির প্রতিনিধিদের পাশাপাশি ক্যারিবিয়ান নেতাদের ক্যারিকম জোটও রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তরণের কাঠামো নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করেছে।
প্রেসিডেন্ট ইরফান আলী বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্সিয়াল পরিষদে দুজন পর্যবেক্ষক এবং সাতজন ভোটদানকারী সদস্য থাকবেন, যাদের মধ্যে কয়েকটি জোট, বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও একজন ধর্মীয় নেতা থাকবেন।
এই কাউন্সিল ২০১৬ সালের পর থেকে হাইতিতে প্রথমবার কোনো নির্বাচন আয়োজনের পথ প্রশস্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোইসের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ক্ষমতায় ছিলেন হেনরি। এই সময়ের মধ্যে তিনি বারবার নির্বাচন স্থগিত করেছেন। তিনি বলতেন, আগে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে।