চার দিনে খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুত ১ লাখ ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি
ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণে গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে গত চার দিনে এক লাখ ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। জাতিসংঘ গতকাল শুক্রবার (২৬ জুলাই) এই তথ্য দিয়েছে। খবর আলজাজিরার।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, গাজায় গত ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা ইসরায়েলি আগ্রাসনের অংশ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে ‘তীব্র শত্রুতার’ মুখে গাজার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা।
ওসিএইচএ জানায়, গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খান ইউনিস শহরের মধ্যাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল থেকে এক লাখ ৮২ হাজার ফিলিস্তিনি নিরাপত্তাহীনতার কারণে অন্য জায়গায় চলে গেছে আর শত শত মানুষ আটকা পড়েছে শহরটির পূর্ব ভাগে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গত সোমবার খান ইউনিসের দক্ষিণ অংশ থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এমনকি মানবিক সহায়তা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাওয়া একটি অঞ্চল থেকেও লোকজনকে চলে যেতে বলে। তারা জানায়, কেউ রয়ে গেলে তাকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে, দেইর আল বালাহ থেকে আলজাজিরার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমানের বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া অতর্কিত এই হামলায় আহত ফিলিস্তিনিরা সবকিছু হারিয়ে রাস্তায় অবস্থান করছে।
এ বিষয়ে আলজাজিরার প্রতিনিধি হিন্দ খোদারি বলেন, ‘লোকজন প্রচণ্ড গরমে কষ্ট পাচ্ছে, রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ ছড়াচ্ছে।’
আলজাজিরার প্রতিনিধি তারিক আবু আজম জানিয়েছেন, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বুরেজি শরণার্থী শিবিরের পূর্ব দিকে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে।
খান ইউনিসে গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া প্রচণ্ড সম্মুখ লড়াইয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি যোদ্ধা শাহাদাত বরণ করেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। হামাস ও ইসলামি জিহাদ পরিচালিত টেলিগ্রাম চ্যানেলের এক তথ্যে জানা গেছে, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা খান ইউনিসে মেশিন গান, মর্টার ও ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর মোকাবিলা করছে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের দূত রিয়াদ মানসুর অভিযোগ করেন, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ অবসানে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ।