যুদ্ধবিরতি নিয়ে দীর্ঘসূত্রতায় একে-অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছে হামাস-ইসরায়েল
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের তেল আবিব সফরের মধ্যেই চাপে থাকা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রশ্নে চুক্তিতে পৌঁছাতে দীর্ঘসূত্রতার জন্য একে-অন্যের ওপর দোষ চাপিয়েছে। খবর এএফপির।
গত বছরের অক্টোবর মাসে ইসরায়েলে হামাসের হামলার মাধ্যমে যে যুদ্ধের সূচনা হয়, তা থামাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হিসেবে এ নিয়ে নবমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফরে এলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরায়েলের আরও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
কূটনীতিকরা বলছেন, গাজা চুক্তি হলে তা এই অঞ্চলকে বড় ধরনের ধ্বংসলীলা থেকে রক্ষা করতে পারবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমানের এই বিশেষ সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ব্লিঙ্কেন চাইছেন যেকোনো দল বা সব পক্ষকে অবশিষ্ট পক্ষের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কাতারে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর আগে হামাস দাবি জানিয়েছিল, আর কোনো দর-কষাকষির আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া রূপরেখা অনুসারে যেন একটি চুক্তির কাঠামো তৈরি করা হয়।
গতকাল রোববার (১৮ আগস্ট) জো বাইডেন জানান, এখনও যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো সম্ভব এবং তা করতে যুক্তরাষ্ট্র আশা ছেড়ে দিচ্ছে না।
কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের আলোচনা শেষে হামাস অচলাবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে দায়ী করে। হামাস অভিযোগ করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে নাকচ করে দিয়েছেন এবং গাজা থেকে পুরোপুরি সৈন্য প্রত্যাহারে অনীহা প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া তিনি নেটজারিম জংশন, রাফাহ ক্রসিং ও ফিলাডেলফি করিডোর নিজেদের দখলে রাখতে জোর খাটাচ্ছেন।
এক বিবৃতিতে হামাস আরও জানায়, মধ্যস্থতাকারীদের উদ্যোগকে ব্যর্থ করে দেওয়া, চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও সমস্ত জীবনহানির জন্য দায়ী থাকবেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। হামাসের কর্মকর্তারা এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নেতানিয়াহুকে চুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরির জন্য অভিযুক্ত করে আসছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পশ্চিমাদের মিত্র দেশ জর্ডান, ইসরায়েলে প্রতিবাদরত পণবন্দিদের সমর্থকরা এবং হামাস নিজে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন সরকারে থাকা উগ্র-ডানপন্থি দলের নেতারা যেকোনো যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে। এ বিষয়ে গতকালও নেতানিয়াহু হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টির পক্ষে তার অবস্থান তুলে ধরেন।
সামনের দিনগুলোতে অবশ্য মিসরের রাজধানী কায়রোতে আবারও দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) কায়রো পৌঁছাবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।