হিজবুল্লাহর আরেক নেতাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। হিজবুল্লাহ প্রধানের মৃত্যুর পর বৈরুতে বিমান হামলায় বাহিনীটির আরেক শীর্ষ নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা৷
গতকাল শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের উপপ্রধান নাবিল কাউক মারা গেছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী৷ তবে রোববার এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি হিজবুল্লাহ৷
সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় ইরানের মদতপুষ্ট বাহিনীটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডার মারা গেছেন৷ দীর্ঘ সময় ধরে দলটির নেতৃত্বে থাকা হাসান নাসরাল্লাহ শুক্রবার মারা যান৷ যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং বিভিন্ন দেশ হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে৷
চীনের নিন্দা ও বিরোধিতা
হিজবুল্লাহ প্রধানের মৃত্যুর পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রতিক্রিয়ায় ‘লেবাননের সার্বভৌমত্ত্ব লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের বিমান হামলার বিরুদ্ধে' তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে সব পক্ষকে বিশেষ করে ইসরায়েলকে সংঘাত বৃদ্ধি করে এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছে তারা৷
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চীন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং অঞ্চলটিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন৷’ বিবৃতিতে ‘সব পক্ষ, বিশেষ করে ইসরায়েলকে পরিস্থিতি শান্ত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে' আহ্বান জানিয়েছে চীন৷
জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলকে বৈঠকের আহ্বান ইরানের
নাসরাল্লাহর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে ইরান৷ ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাভানি নিরাপত্তা কাউন্সিলকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, ইসরায়েল ‘যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত হাজার পাউন্ডের বাঙ্কার বাস্টার ব্যবহার করে বৈরুতের আবাসিক এলাকায় সন্ত্রাসী আগ্রাসন চালানোর মতো স্পষ্ট কর্মকাণ্ড চালিয়েছে৷’
নিরাপত্তা কাউন্সিল যাতে ‘ইসরায়েলের হামলা বন্ধে দ্রুত এবং দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়’ সেই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ যদিও ১৫ সদস্যের কাউন্সিলের এ ধরনের বৈঠকের কখন হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে৷ রোববার এমন বৈঠকের সম্ভাবনা নেই বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে৷
এক হাজারের বেশি প্রাণহানি
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে তারা ‘অল্প কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কয়েক ডজন সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে'৷ আইডিএফ দাবি করেছে হিজবুল্লাহর অস্ত্র ও সামরিক স্থাপনা রয়েছে এমন ভবনগুলোতে তারা হামলা চালিয়েছে৷
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে ইসরায়েলের চালানো হামলায় দেশটিতে এক হাজার ত্রিশ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন৷ এরমধ্যে ১৫৬ নারী ও ৮৭ শিশু রয়েছে৷
জাতিসংঘ জানিয়েছে, হামলার কারণে দুই লাখ মানুষ লেবাননের ভেতরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন৷ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ পার্শ্ববর্তী সিরিয়ায় পালিয়ে গেছেন৷