শান্তি রক্ষায় ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনে ‘প্রস্তুত’ ব্রিটেন

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার জানিয়েছেন, ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ব্রিটিশ সেনা মোতায়েনের জন্য ‘প্রস্তুত ও আগ্রহী’। ডেইলি টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক নিবন্ধে স্টারমার লেখেন, ‘পুতিনের ভবিষ্যৎ আগ্রাসন রুখতে ইউক্রেনে একটি টেকসই শান্তি ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি।’ খবর বিবিসির।
আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের জরুরি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সেনা মোতায়েনের মাধ্যমেও ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত আছি, যদি তা প্রয়োজন হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এটি হালকাভাবে বলছি না। আমাদের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া জরুরি।’
সাবেক ব্রিটিশ সেনাপ্রধান লর্ড ড্যানাটের মতে, যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী বর্তমানে এতটাই দুর্বল যে তারা ইউক্রেনে কোনো শান্তিরক্ষা মিশনের নেতৃত্ব দিতে পারবে না। তিনি বলেন, ইউক্রেনে শান্তিরক্ষা বাহিনীতে এক লাখ সেনার প্রয়োজন হবে, যেখানে যুক্তরাজ্যকে অন্তত ৪০ হাজার সেনা দিতে হতে পারে – যা বর্তমান সক্ষমতার বাইরে।
এদিকে, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইউরোপীয় নেতাদের বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা এগিয়ে চলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথোপকথনের পর বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ আলোচনা শুরু করা হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শিগগিরই সৌদি আরবে রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে ইউক্রেন সরকার নিশ্চিত করেছে যে, তারা এই আলোচনায় আমন্ত্রণ পায়নি।

স্টারমার তার নিবন্ধে আরও বলেন, ‘শান্তি যে কোনো মূল্যে আসতে পারে না। ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে থাকতে হবে, কারণ অন্যথায় পুতিনের সেই দাবি মেনে নেওয়া হবে যে ইউক্রেন একটি স্বতন্ত্র দেশ নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানের মতো পরিস্থিতি চাই না, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছিল এবং আফগান সরকারকে উপেক্ষা করেছিল।’
এদিকে, ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদকে ‘অপরিবর্তনীয়’ উল্লেখ করে স্টারমার ইউরোপীয় দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রতিরক্ষায় জিডিপির ২.৩ শতাংশ ব্যয় করে, যা ২.৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ডাকা এই জরুরি বৈঠকে জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কের নেতারা এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টরা অংশ নেবেন।