সরকার পরিবর্তন হলে ভারতের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের পরিবর্তন হতে পারে : ভারতীয় সেনাপ্রধান

ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সামরিক সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী এবং উভয় দেশের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবে নোট বিনিময় করে থাকে। তবে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হলে ভারতের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের পরিবর্তন হতে পারে।
শনিবার (৮ মার্চ) রাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে এক ইন্টারেক্টিভ অধিবেশনে পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধান বক্তব্য দিতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভারতীয় সেনাপ্রধান এ মন্তব্য করেন।
এসময় পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, উভয় দেশের মধ্যে উচ্চমাত্রার যোগসাজশ রয়েছে এবং এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে নৈকট্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার মতে, দুটি ফ্রন্টের হুমকি এখন বাস্তবতা।”
অধিবেশন চলাকালীন ভারতীয় সেনাপ্রধান ভবিষ্যতের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি, চলমান সংঘাত থেকে শিক্ষা, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ও নিয়ন্ত্রণ রেখা সম্পর্কে নানা প্রশ্নের জবাব দেন।
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, “যেহেতু আমি বলেছি— সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থল একটি নির্দিষ্ট দেশে, তাদের আবার আমার যেকোনও প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পর্ক রয়েছে, তাই আমার চিন্তিত হওয়া উচিত, কারণ যতদূর আমি জানি, সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি সেই দেশ থেকেও ব্যবহার করা যেতে পারে, যা আজ আমাদের প্রধান উদ্বেগ।”
জেনারেল দ্বিবেদী আরও বলেন, বাংলাদেশের ভূমিকা সম্পর্কে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া ‘অনেক তাড়াতাড়ি’ হতে পারে। সেখানে (বাংলাদেশে) সরকার পরিবর্তনের ফলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের পরিবর্তন আসতে পারে।
ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, “আমি খুব স্পষ্ট করেই বলব, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমান সামরিক সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী। আমরা নিয়মিতভাবে নোট বিনিময় করি, যাতে যেকোনও ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বা সন্দেহ এড়ানো যায়।”
ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান-চীন সমীকরণকে কীভাবে দেখে জানতে চাওয়া হলে উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, “আমাদের যা বুঝতে হবে তা হলো... আমাদের খুব স্পষ্ট হতে হবে যে— এখানে উচ্চ মাত্রার যোগসাজশ রয়েছে, যা আমাদের মেনে নিতে হবে। ভার্চুয়াল জগতের ক্ষেত্রে এটি প্রায় ১০০ শতাংশ; আর ভৌত ক্ষেত্রে, আমি বলব যে বেশিরভাগ সরঞ্জাম চীনা উৎপত্তি। সুতরাং, আজকের পরিস্থিতিতে এই যোগসাজশ উদ্বেগের। এর অর্থ, আমার মতে— দুই-ফ্রন্টের হুমকি... আমার কাছে এখন এটি একটি বাস্তবতা।”
ভারতীয় সেনাপ্রধান ‘সহাবস্থান, সহযোগিতা ও সমন্বয়ের’ আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুদ্ধে জড়ানো (এই অঞ্চলের) দেশগুলোর জন্য ভালো নয়। যুদ্ধ কি উভয় দেশের স্বার্থে ভালো? উত্তর হলো— না। তাই, আমরা যা দেখছি তা হলো— কীভাবে আমরা আজকের পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে পারি এবং কূটনৈতিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা না করা পর্যন্ত তা কীভাবে পরিচালনা করতে পারি।