তুরস্কে বিক্ষোভের জেরে সাংবাদিকসহ গ্রেপ্তার ১১১৩

তুরস্কে পাঁচ দিনের টানা বিক্ষোভের ঘটনায় ১০ সাংবাদিকসহ এক হাজার ১১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এ বিক্ষোভের জন্য প্রধান বিরোধী দলকে দায়ী করেছেন। খবর আল-জাজিরার।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার (২৪ মার্চ) দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া জানিয়েছেন, এটি গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন। বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় গত বুধবার, যখন ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতি, কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে (পিকেকে) সহায়তা এবং একটি অপরাধী সংগঠন পরিচালনার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

আঙ্কারায় এক বক্তব্যে এরদোয়ান প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টিকে (সিএইচপি) “হিংসার আন্দোলন” ছড়ানোর জন্য দায়ী করেন। তিনি বলেন, বিরোধীদের এই “নাটক” শেষ হবে এবং তারা নিজেদের “অপকর্মের” জন্য লজ্জিত হবে।
ইস্তানবুল থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক আকসেল জাইমোভিচ জানান, বিপুল সংখ্যক গ্রেপ্তার সত্ত্বেও বিরোধীরা পিছু হটছে না। তিনি বলেন, “তারা বলছে তারা পিছু হটবে না, বরং আরও বেশি মানুষকে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।”

ইমামোগলুকে এরদোয়ানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়। সরকার দাবি করছে, তার গ্রেপ্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় এবং আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে।
গত রোববার (২৩ মার্চ) ৫৩ বছর বয়সী ইমামোগলুকে ইস্তানবুলের মেয়রের পদ থেকে সরিয়ে সিলিভ্রি কারাগারে পাঠানো হয়। যদিও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে, দুর্নীতির মামলায় তার বিচার চলবে।
তার গ্রেপ্তারের পর ইস্তানবুল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে ৫৫টির বেশি অঞ্চলে। রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে, যেখানে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে।

অন্যদিকে, সরকারবিরোধী সংবাদমাধ্যমের ওপরও চাপ বাড়ানো হয়েছে। সোমবার ভোরে ১০ জন সাংবাদিককে তাদের বাড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ, জানিয়েছে মিডিয়া অ্যান্ড ল’ স্টাডিজ অ্যাসোসিয়েশন।
সন্ধ্যায় প্রধান বিক্ষোভ শুরুর আগে, দুপুরে ইস্তানবুলের বেসিকতাস বন্দরে তরুণ বিক্ষোভকারীরা সমাবেশ করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েরলিকায়া জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ১২৩ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা রাস্তাগুলোকে সন্ত্রাসের আস্তানা হতে দেবো না।”