মোকারম হোসেনের শিশুতোষ দুই বই
এবারের একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে প্রকৃতিবিষয়ক লেখক মোকারম হোসেনের দুটি বই ‘রংধনু ফুল’ ও ‘রঙের গাছ’। বই দুটি প্রকাশ করেছে শিশুপ্রকাশ। বই দুটির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিচে দেওয়া হলো।
রংধনুর ফুল
রংধনুর ফুল? এ আবার কী? মনে হতে পারে খুবই আজগুবি একটা ব্যাপার। রংধনুর আবার ফুল হয় নাকি! আসলে বিষয়টা ঠিক সে রকম কিছু নয়। রংধনুর ভেতর কোনো ফুল না থাকলেও এক ধরনের রঙের খেলা থাকে। আমরা সেসব বর্ণাঢ্য রং দেখে অভিভূত হই। নিজেরা দেখে আবার বন্ধুদেরও এনে দেখাই। রংধনু নিয়ে এত আগ্রহের কারণ একটাই, রঙের বিচিত্রতা। আসলে আমরা নানান রকম রং পছন্দ করি। সে কারণে প্রকৃতির বিচিত্র রংও আমাদের ভালোলাগে। কিন্তু আমরা প্রকৃতিতে যা কিছু দেখি, তা হুবহু মানুষ বানাতে পারে না। অনেকটা কাছাকাছি যেতে পারে মাত্র। কারণ প্রকৃতির নিজস্ব রংটা মানুষ শুধু কল্পনা করতে পারে। পাতার কথাই ধরা যাক, একটি পাতার রং সময়ের ব্যবধানে আমূল বদলে যেতে পারে। তবে এই বদলানো রং শিল্পীর আঁকায় কাছাকাছি একটা রূপ দাঁড় করাতে পারে মাত্র। তবুও আমরা সেই কাছাকাছি রংটা দেখেই খুশি হই। তাহলে এবার দেখা যাক আমরা রংধনুর সাতটি রং প্রকৃতির অন্য কোনো উপাদান থেকে মেলাতে পারি কি না।
রংধনুর সাত রং খুব সহজে মনে রাখার জন্য আমরা যে শব্দটি ব্যবহার করি তা হচ্ছে—বেনীআসহকলা। এই শব্দটি তৈরি করা হয়েছে সাত রঙের প্রথম অক্ষর দিয়ে। অক্ষরগুলো অর্থসহ সাজালে যে সাতটি রং পাওয়া যায় তা হলো—বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা আর লাল। আমাদের চারপাশে যে বিশাল ফুলের সাম্রাজ্য, সেখান থেকেই এর কাছাকাছি রঙের ফুলগুলো খুঁজে বের করা যায়। এবার তাহলে আমরা ফুলের রং থেকেই রংধনুর রংগুলো সাজাতে চেষ্টা করব। যদিও একই রঙের অনেক ফুল রয়েছে, আমরা প্রতীক হিসেবে শুধু একটি রঙের জন্য একটি ফুলই বেছে নেব। আরেকটি কথা, ফুলের রং হবহু একই রকম নাও হতে পারে। তবে কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করেছি।
রঙের গাছ
গাছ আমাদের অনেক ধরনের প্রয়োজন মেটায়। এর মধ্যে খাবার, অক্সিজেন এবং ওষুধের কাঁচামাল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু গাছের আরেকটি দরকারি ব্যবহারের কথা আমরা খুব একটা জানি না। এই ব্যবহার হচ্ছে রং নিয়ে। কিছু কিছু গাছ থেকে সরাসরি রং পাওয়া যায়। এসব রং বর্ণের দিক থেকে নানা রকম। প্রাচীনকালে যখন কোনো কৃত্রিম রং আবিষ্কৃত হয়নি, তখন প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া এসব রং ব্যবহার করা হতো। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এসব প্রাকৃতিক রঙ আমাদের কোনো ক্ষতি করে না। এ কারণে বিভিন্ন কাজে গাছগাছড়ার রং ব্যবহার সবচেয়ে নিরাপদ। তবে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ খাবারের ক্ষেত্রে। কারণ, দেশে বেশিরভাগ খাবারেই এখন ক্ষতিকর কৃত্রিম রং ব্যবহার করা হয়। প্রাকৃতিক রং ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকিই থাকে না। মূলত রঙের গাছ নিয়েই এই বই।