সমকাল শিল্পীগোষ্ঠীর ‘বিশ্বভাষার নন্দনরূপ’
বাঙালি ও ঐতিহ্যের প্রতিপালনে ব্রত বাংলার চারুশিল্পীরা সব সময় নিবেদিত ছিলেন। অবিভক্ত ভারতে বাঙালি শিল্পীরা তাঁদের সৃজনশীলতা দিয়ে বিশ্বের দরবারে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করেছেন। এমন একদল শিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের নেতৃত্বে গড়ে তোলেন চারুকলা অনুষদ। তৎসময়ের তরুণ শিল্পীরা ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামে সাধারণের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করেছেন। স্বাধীনতা উত্তরকালে সাধারণের মাঝে নন্দনবোধ সৃষ্টি ও সাধারণের জন্য শিল্পকর্ম এই ব্রত নিয়ে শিল্পী নাসির বিশ্বাস, বজলুল করিম ভূঁইয়া, সাঈদা সুলতানা, আবদুস শাকুর শাহ্, মাহবুবুল আমিন, মতলুব আলী ও আবুল বারক আলভীর ক্রমাগত চেষ্টায় ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রদর্শনীর মধ্যে আত্মপ্রকাশ করে সমকাল শিল্পীগোষ্ঠী।
গ্যালারি চিত্রকে সমকাল শিল্পীগোষ্ঠীর ৪৫জন শিল্পীর সাম্প্রতিককালে আঁকা ৮২টি চিত্রকর্ম নিয়ে ‘বিশ্বভাষার নন্দনরূপ’ শিরোনামে শুরু হয়েছে নবম চিত্রকর্ম প্রদর্শনী।
গত ১৬ অক্টোবর বিকেল ৫টায় এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও চিত্র সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী।
সুস্থ একটি সমাজ বিনির্মাণে সমাজে সকল অংশের নান্দনিক চিন্তাচেতনার বিকাশ জরুরি বিবেচনা করে সমকালের শিল্পীরা দৃঢ়তার সঙ্গে শিল্পকলার জগৎকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টায় নিরন্তন কাজ করে চলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সাধারণের মাঝে বসে তাঁদের শিল্পভাবনা ও বাংলার ঐতিহ্যকে শিল্পরূপ দিতে ২০১২ কুমিল্লার ময়নামতিতে এবং নেত্রকোনার বিরিসিরিতে বরেণ্য চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে তিনদিনের জলরং কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া ২০১৩ সালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের গ্যালারি অঙ্গনে শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, শিল্পী মনিরুল ইসলাম ও শিল্পী হামিদুজ্জামান খানের তত্ত্বাবধানে দুদিনের জলরং কর্মশালায় অংশ নেন সমকালের শিল্পীরা। এ দুই কর্মশালার জলরঙে অঙ্কিত চিত্রকর্মগুলো নিয়েই সমকাল শিল্পীগোষ্ঠীর এবারের এই প্রদর্শনী।
প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ২৬ অক্টোবর (প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা) পর্যন্ত।