কবিতা
সহসা দুয়ারে
১.
গভীর পথের ভার। পরিশ্রুত ছায়ারা বলেনি এ পথে এসো না। আলো হলো দুধ, আকাশে ছিটিয়ে দেখো। ঘন অবতরণে নামছে গগনরক্ষী, উন্মাদ। বাতাসের পাগলা অরণ্যে পথ হারিয়ে এই বড় লাভ : হাওয়াকে উধাও করে একাকী দাঁড়িয়ে থাকা। সব কিছু জুয়া। জাদুর প্যান্ডরাবক্সে ধবল পাথর ঠুকে যারা আয়ত্ব করেছ কামাক্ষ্যার বিদ্যা, সাড়া ফেল, কে আগে দৌড়াতে পারো দেখি।
যাত্রাদেবী জুলেখার কিসসা জাগিয়ে আগেভাগেই চলে গেছ, তুমি! দুপুরের জলপুকুরসমেত ভেঙে পড়ার মতো এ জীবন চেয়েছ, চেয়েছিলে—ভিখারিনী মেয়েটির হাতে সোনার বাটির খোঁজ রেখে?
২.
একাকীত্ব সোনায় মোড়ানো, দুর্ধর্ষ নিজাম ডাকু হয়ে নামছে গম্ভীর শাদা কাগজে। অক্ষরে অক্ষরে বহতা রক্তজগৎ আর রাঙা জাদুকরি আভা হা-রে-রে-রে ডাকাতদলের আসা-যাওয়ার পথে প্রগাঢ় লালগালিচা মেলে রাখে। অভ্রদানা লুণ্ঠনের কালে পরাক্রমী তরবারি নম্র কুলবধূ সাজে দাঁড়ায় না কোনোদিন। মানুষ কেবলি তাই টলমল। ভয়ে ভেঙে মিছরির মতন গলে। মিষ্টি পানি নাকি হয়ে যায় সবাই হে!
চেঙ্গিস খানের পৃথিবী রক্তাক্ত বকুল ফুলে ভরা। কাটা মাথা। আর্তনাদ। কণ্ঠ-ছিন্ন গায়কের সুরে সন্ত্রস্ত অক্ষর। কাঁপে আজ। একা। দুর্ভাগা নিজাম ডাকু নিশি হয়ে আসে
৩.
সব কিছু লিখে রাখতে ইচ্ছে করে। গানের মোহরগুলো মদের ওপাশে পাহাড় বাজায়—মাটি! গাছের আড়ালে পর্দাঘেরা আচ্ছন্নতায় কখনো লেখা হবে না ‘আমার সব কয়েদি সুধা’। কার পায়ের বিবর্ণ আলতায় অস্ফুট কথাটি মোম-গলে পড়ল! সহসা দুয়ারে বনমালি বাঁশি নিয়ে এসো, সেই মূর্ছনায় মাটির বাক্সে নির্বাক সমুদ্র এসে বসুক
স্তব্ধতা বরাবরই মসৃণ, পাপ ডেকে আনে। তার মধ্যে ডুবে যায় খুনি, লেখার আঙুল...