নাট্যকার সেলিম আল দীনের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী আজ
রবীন্দ্রত্তোরকালের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী আজ শুক্রবার (১৮ আগস্ট)। ১৯৪৯ সালের আজকের এই দিনে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সেনেরখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা নাটকের মহাপুরুষ।
তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বাংলায় বিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালে তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে যোগদান করেন।
তিনি ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাটকের বিষয় ও আঙ্গিক নিজ নাটকে প্রয়োগ করেছেন। খ্যাতিমান অধ্যাপক ও নাট্যকার পরিচয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন গবেষক, সংগঠক, নাট্যনির্দেশক এবং শিল্পতাত্ত্বিক। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তরকালে ‘ঢাকা থিয়েটার’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি।
১৯৮১-৮২ সালে তিনি এবং নাট্য-নির্দেশক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার গড়ে তোলেন এবং দেশব্যাপী কাজ করতে থাকেন। তার অনুবাদ ও সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় নন্দিকেশ্বরের অভিনয় দর্পণ (১৯৮২)। ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয় তার গবেষণা গ্রন্থ ‘মধ্যযুগের বাংলা নাট্য’। তার কাব্যগ্রন্থ : কবি ও তিমি (১৯৯০), উপন্যাস : অমৃত উপাখ্যান (২০০৫)।
সেলিম আল দীনের উল্লেখযোগ্য নাটক ও নাট্যগ্রন্থসর্প বিষয়ক গল্প ও অন্যান্য নাটক (১৯৭৩), জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন (১৯৭৫), বাসন (১৯৮৫)। তিনটি মঞ্চ নাটক : মুনতাসির, শকুন্তলা ও কিত্তনখোলা (১৯৮৬), কেরামতমঙ্গল (১৯৮৮), প্রাচ্য (১৯৯৮), হাতহদাই (১৯৯৭), যৈবতী কন্যার মন (১৯৯৩), চাকা (১৯৯১), হরগজ (১৯৯২), একটি মারমা রূপকথা (১৯৯৫), বনপাংশুল (১৯৯৬), নিমজ্জন (২০০২), ধাবমান, স্বর্ণবোয়াল (২০০৭), ঊষা উৎসব ও স্বপ্নরমণীগণ (নৃত্যনাট্য, ২০০৭), পুত্র (২০০৮) ইত্যাদি।
নাটকে অসামান্য অবদানের জন্য সেলিম আল দীন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, নান্দিকার পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি মারা যান তিনি।