বইমেলায় প্রতিবাদ, অবিলম্বে গেট খুলে দেওয়ার দাবি!
অমর একুশে বইমেলায় প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বেশ কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। অমর একুশে বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মন্দিরের পথের গেটে বের হওয়া ও প্রবেশমুখ পরিকল্পনা অনুযায়ী খোলা রাখার দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। এর আগেও বাংলা একাডেমিতে এ বিষয়ে একটি আবেদন করেছিলেন বলে জানান এই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। সেই দাবি না মানায় আজ প্রতিবাদে নামল তারা।
আজ বিকেলে মেলা প্রঙ্গণে কর্মসূচিতে বিক্ষুব্ধরা জানান, ‘একটি মানবিক আবেদন ও মেলার গেট খোলা প্রসঙ্গে (অমর একুশে বইমেলা ২০২৪)’ বিষয় উল্লেখ করে মেলার শুরুর দিকে একটি আবেদন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বরাবর করেছিলেন। সেখানে তারা জানান, মেলায় অংশগ্রহণকারী ৬৩ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মূল স্রোতের বিপরীতে পড়েছে। অমর একুশে বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মন্দিরের পথের গেটে বের হওয়া ও প্রবেশমুখ খোলা রাখার কথা থাকলেও দ্বিতীয় দিন মেলা চলাকালীন সময় তিনটি সারি বন্ধ রেখে শুধু দুটি দিয়ে বের হতে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ওই তিনটি সারি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে অনেকেই এই পথটি পরিহার করছে, যা বেচাকেনায় প্রভাব ফেলছে। ফলে এই ৬৩ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মুক্তদেশ প্রকাশন স্বত্বাধিকারী জাবেদ ইমন বলেন, এই আবেদনের কপি তারা বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি, বাংলা একাডেমি সচিব, মেলার সদস্য সচিব, বাপুস সৃজনশীল সাহিত্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সচিব ও বাপুস মেলা পরিচালনা কমিটি সদস্য সচিবকে দেওয়া হয়েছে। এরপরও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজ তারা এই প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ কমিটির সদস্য সচিব মুজাহিদুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গতবারের মেলার বিন্যাস প্রশংসিত ছিল বলে এবারও সেভাবে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে, বিভিন্ন সময়ে বইমেলা নিয়ে নানা কথা হয় বলে এবার শুরুতেই পুস্তক বিক্রেতাদের সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা হয়। একইসঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলা হয়। পুস্তক বিক্রেতা সমিতির প্রতিনিধিরা গতবারের মতো ফাঁকা স্থান না রেখে মেলা আরও এগিয়ে আনার জন্য চাপ দেন। পরে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পুস্তক বিক্রেতা সমিতির চাহিদামতো মেলার স্টল ও প্যাভিলিয়ন বিন্যাস করতে গিয়ে ৬০ থেকে ৬৫টি স্টল সাজানো যাচ্ছিল না। তখন ফের সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে তাদের পরামর্শে মেলা উপযোগী করে গড়ে দেওয়া হয় স্থানটি। তারপর ডিজিটাল লটারি পদ্ধতিতে মেলায় কোন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কোথায় পড়বে তা নির্ধারণ হয়। এক্ষেত্রে মেলা কমিটি বইমেলাকে সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। কোনো কার্পণ্য করা হয়নি।
অভিযোগ আবেদন প্রসঙ্গে মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, একটি আবেদন এসেছে। এরপর আবেদনকারীদের সব বিষয়টি তুলে ধরে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। তাদের প্রতিনিধিরা যেহেতু শুরু থেকে সব বিষয়েই ছিলেন, তাদেরকে পাঠিয়ে বা তাদের সঙ্গে নিয়ে কথা বলতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তারা আসেননি।
মেট্রোরেল স্টেশনের একপাশের সিঁড়ির দিক দিয়ে মন্দিরের পথে বইমেলা থেকে বের হওয়ার জন্য কয়েকটি সারি থাকলেও একটি বাদে সব কয়টি বন্ধ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে এই সদস্য সচিব বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। তবে, আমরা আমাদের যথাসাধ্য সব সুবিধা দিয়ে মেলার সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।