অগ্নিসন্ত্রাস মোকাবিলা করেছি, করোনাভাইরাসও করতে পারব : প্রধানমন্ত্রী
বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মনে জোর রেখে একযোগে কাজ করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নানা সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমরা মোকাবিলা করি। মনুষ্যসৃষ্ট অগ্নিসন্ত্রাসসহ বিভিন্ন সময়ের দুর্যোগও আমরা মোকাবিলা করেছি। এবারের এ করোনাভাইরাসও আমরা মোকাবিলা করতে পারব। এ পরিস্থিতিও আমরা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো।’
আজ সোমবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে রংপুর বিভাগের অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলোর জনপ্রতিনিধি এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’আমার মনে একটিই দুঃখ, জাতির পিতা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। আমরাও সে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এর মধ্যেই আমরা দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে পেরেছিলাম। সুস্থ পরিবেশ থাকলে এ বছরের মধ্যেই, অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যে আরো কমাতে পারতাম। করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের কাজ কিছুটা স্থবির হয়ে গেছে। তবে আমি আশাবাদী, আমরা সবাই একযোগে কাজ করতে পারলে আমাদের যে অগ্রযাত্রা তা অব্যাহত রাখতে পারব।’
সবাইকে মনে জোর রেখে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমস্যা আসবে। এটাকে মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। রংপুরকে আমরা মঙ্গামুক্ত করেছিলাম। রংপুরে যেন আবারও মঙ্গা ফিরে না আসে, সেদিকে নজর রেখে সবাইকে কাজ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনার কারণে বিশ্বে আগামীতে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কাজেই আমাদের প্রতি ইঞ্চি জমি কাজে লাগাতে হবে। আমাদের জমি উর্বর ও মানুষ পরিশ্রমী। সবাই সব জমি আবাদ করলে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করেও অন্যান্য দেশে খাদ্য রপ্তানি করতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২১ লাখ টন খাদ্যশস্য কৃষকদের কাছ থেকে কিনব। এ দিয়ে সামনে আমাদের কয়েক মাস চলবে। আশা করি, খাদ্যের জন্য মানুষের কোনো সমস্যা হবে না। পেটে খেলে পিঠে সয়। কাজেই আমরা এর মধ্যেই আমরা কৃষি প্রণোদনা ঘোষণা করেছি। যাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ে।’ তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান অবস্থা মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। আমরা সব ব্যবস্থাই নিয়েছি। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছিল। মানুষকে সুরক্ষিত রেখে দেশের অর্থনীতির চাকাও যাতে সচল থাকে, সে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
দেশবাসীকে এ মহামারি থেকে রক্ষা পেতে সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দোকানপাট খোলা হলেও সবখানে বেশি ভিড় করা যাবে না। সবাইকে কোলাহল ও বড় জমায়েত বা সমাবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। বারবার হাত ধোয়া ও মাস্ক পরতে হবে। নিজেকে রক্ষা করতে হবে, আবার অপরের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকেও নজর রাখতে হবে।
বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এ ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়। এতে রংপুর বিভাগের রংপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ছয় ধাপে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেছেন।