অভিজাত এলাকায় গাড়ি ঢুকলে বাড়তি ট্যাক্স : মেয়র আতিক
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীর গুলশান-বারিধারার মতো অভিজাত এলাকায় গাড়ি চালালে বাড়তি ‘ট্যাক্স’ দিতে হবে। তিনি বলেন, রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেছে। এ কারণে যানজট হচ্ছে। তাই পরিকল্পনা হয়েছে, অভিজাত এলাকার সড়কে গাড়ি নিয়ে ঢুকলে ট্যাক্স দিতে হবে।
আজ শনিবার বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উপলক্ষে সকালে রাজধানীর মালিবাগ-খিলগাঁও এলাকায় আয়োজিত পদযাত্রা অনুষ্ঠানে মেয়র এ কথা বলেন।
‘গণপরিবহন ও হেঁটে চলি, ব্যক্তিগত গাড়ি সীমিত করি’ প্রতিপাদ্যে ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, গাড়ির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। গুলশান-১ থেকে গুলশান-২ নম্বর, কাকলি থেকে গুলশান কিংবা বারিধারা, শুধু গাড়ি আর গাড়ি। একেকটি পরিবারের মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে—প্রত্যেকের গাড়ি আছে। গাড়ির ভিড়ে যানজট হচ্ছে, মানুষ গালিগালাজ করছে। কিন্তু কেন এত ভিড় হচ্ছে, এ নিয়ে কেউ ভাবছেন না।
মেয়র আরও বলেন, ফুটপাত তৈরির পরের দিনই তা দখল হয়ে যাচ্ছে। ফুটপাতে ব্যবসা হচ্ছে। এই দখলের নেপথ্যে সবাই জড়িত জানিয়ে তিনি বলেন, ফুটপাত দখলের বিষয়ে থানা-পুলিশকে বললে পুলিশ বলে, তারা করে না। রাজনৈতিক নেতা ও কাউন্সিলর সেখানে জড়িত। কাউন্সিলরকে বললে তাঁরা বলেন, সেখানে পুলিশ জড়িত। এক ধরনের চক্রাকার খেলা চলছে।
এই খেলা থেকে মুক্তি পেতে নগর-পরিকল্পনাবিদদের নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, বিদেশের ইভিনিং কিংবা হলিডে মার্কেটের মতো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফুটপাতে ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে ব্যবসা করা যাবে না। এই নিয়মে কাউকে চাঁদা দিতে হবে না। নির্ভয়ে ব্যবসা করা যাবে।
ফুটপাতে অবৈধ দখল থাকায় রাস্তায় যানজট হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ফুটপাতে অবৈধ দখলদারের কারণে মানুষ রাস্তায় নেমে হাঁটছে। এতে যানজট আরও বেশি হচ্ছে। ফুটপাত দখলমুক্ত থাকলে মানুষ নির্বিঘ্নে ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে পারত। তখন রাস্তায় যানজট হতো না।
ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজির বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘কে কোন জায়গা থেকে চাঁদা নেয়, কতজন কতটি দোকান থেকে চাঁদা তোলে, এসবের তালিকা আমার কাছে আছে। চাঁদাবাজির সঙ্গে সবাই জড়িত। তাই এটাকে সামাজিকভাবে প্রতিহত করতে হবে। সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। এটা মেয়র, স্থানীয় সংসদ সদস্য, কাউন্সিলর ও পুলিশ একা করতে পারবে না।’
সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমি যা বলি, তা করি এবং করার চেষ্টা করি। অন্যায় ও দখলদারদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে। আর ঘরে বসে চুপ করে থাকা যাবে না। সবাইকে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিতে হবে।’
শেষে আয়োজকদের ধন্যবাদ দিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যক্তিগত গাড়ি সীমিত করে ফুটপাত দিয়ে হাঁটলে, সাইকেল চালালে নিজেরা যেমন সুস্থ থাকব, নগরকেও সুস্থ রাখতে পারব। তাই আজ যাঁরা সমাজের নেতাদের ও যুবসমাজকে নিয়ে এই কাজে এগিয়ে এসেছেন, আপনাদের ধন্যবাদ।’