অস্ত্র মামলায় জি কে শামীমের জামিন বাতিল
অস্ত্র মামলায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের জামিনাদেশ প্রত্যাহার (রিকল) করেছেন হাইকোর্ট। এতে করে তাঁর জামিন বাতিল হলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আজ রোববার দুপুরে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিজেদের দেওয়া আগের এ আদেশ প্রত্যাহার করে এ আদেশ দেন।
এর আগে জি কে শামীমের জামিনের বিষয়টি গতকাল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসার পর টনক নড়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের। পরে আজ সকালে এই বেঞ্চে সম্পূরক কার্যতালিকায় জি কে শামীমের মামলাটি আদেশের জন্য রাখা হয়েছিল। এ মামলায় তিনি ৬ ফেব্রুয়ারি ছয় মাসের জামিন পেয়েছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী ও শওকত ওসমান।
দুপুর ১টার দিকে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান আদালতে বলেন, ‘এ মামলার শুনানিকালে আমাদের কোনো নথি দেওয়া হয়নি। নামের বিভ্রাট করে এবং প্রতারণা করে জামিন নিয়েছেন। আসামি জি কে শামীম নামে পরিচিত। কিন্তু কার্যতালিকায় শুধু এস এম গোলাম রয়েছে। এ কারণে আমরা বুঝতে পারিনি।’
এ সময় আসামি জি কে শামীমের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী আদালতে বলেন, ‘শুনানি করে জামিন হয়েছে। আসামি জি কে শামীমের বৈধ লাইসেন্স আছে। নবায়ন না করার অপরাধে তাঁকে মামলা দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি হলো ছয় মাস। কিন্তু আসামি চার মাস ধরে কারাগারে রয়েছে। আদালতে কার্যতালিকায় এবং মামলার নথিতে আসামির নাম এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম রয়েছে।’
পরে আদালত আসামির জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে নেন।
এর আগে গতকাল ৭ মার্চ আসামি জি কে শামীমের আইনজীবী শওকত ওসমান জানিয়েছিলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৪ ও ৬ তারিখে তিনি হাইকোর্টের দুই বেঞ্চ থেকে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি এক বছর ও অপরটিতে ছয় মাস পেয়েছেন। মানি লন্ডারিং ও দুদকের আরো দুটি মামলা আছে, সেগুলোর জন্য অলরেডি হলফনামা করা হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপক্ষ এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযোগের মধ্যে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় ওই ভবন থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা, এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযানের সময় জি কে শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে গত ২৮ জানুয়ারি অস্ত্র আইনের মামলায় বিচার শুরু হয়েছে।
২৮ জানুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রবিউল আলম অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। জি কে শামীম ছাড়াও এ মামলার অভিযুক্ত সাত দেহরক্ষী হলেন দেলোয়ার হোসেন, মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, সহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, সামসাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম। এ সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন এবং নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেন।