‘আমি বাজেট-টাজেট বুঝি না, পেট চললেই খুশি’
জব্বুল রহমান। তিনি ২০ বছর ধরে রিকশা চালান। জব্বুল বাজেট সম্পর্কে তেমন কিছু বোঝেন না। তবে, তিনি পেট কীভাবে চালাতে হবে তা বোঝেন।
জব্বুল শুনেছেন, আজ বৃহস্পতিবার সংসদে বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার। বাজেট ঘোষণা সম্পর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এক কথায় জব্বুলের জবাব, ‘আমি বাজেট-টাজেট বুঝি না, পেট চললেই খুশি।’
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের রিকশা ধরে দাঁড়িয়ে থেকে জব্বুল রহমান বললেন, ‘প্রত্যেকদিন চাল, ডাল, তেলসহ সবজির দাম বাড়ছে। বাড়ে না শুধু রিকশার পেডেল মারার দাম। অনেক কষ্ট হয় ছেলে-মেয়েকে খাওয়াতে। আমার দুই মেয়ে লেখাপড়া করে। সব মিলিয়ে হসপছ অবস্থা।’
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ, আলু আর রসুন বিক্রেতা আবদুল হামিদ। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় মনে হলো, তিনি বেশ সচেতন মানুষ। কথা প্রসঙ্গে বললেন, ‘বাজেটে কি কি ঘোষণা হয়েছে, তা এখনও শুনিনি। কাল সকালে পত্রিকা পড়ে দেখি, কি অবস্থা। তখন কিছু ব্যাপারে জানতে পারব।’
‘তবে, অন্য বছরের বাজেট স্মরণে নিলে বলা যায়; বাজেট মানেই দাম বাড়ার সমীকরণ’, যোগ করেন হামিদ।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমার প্রতিদিন যেসব জিনিস কিনে খেতে হয়, সেসবের দাম কম থাকলেই আমি খুশি। কিন্তু, তা তো হয় না। এক জোড়া জুতার দাম ২০ টাকা বেশি দিয়ে কিনলে আমার খারাপ লাগবে না। কারণ, জুতা আমি বছরে হয়তো এক বা দুবার কিনব। কিন্তু, চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে আমার অসুবিধা। কারণ, এসব জিনিসের দাম বাড়ুক আর না বাড়ুক; আমাকে প্রতিদিন কিনতে হবে।’
কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে গিয়েছিলেন মাহমুদ রাকিব নামের এক ক্রেতা। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। রাকিব বলছিলেন, ‘আমার বেতন বাড়ে না তিন বছর হলো। কিন্তু, প্রতিদিন সব জিনিসের দাম বাড়ছে। বাজেট এলেই সবকিছুর দাম আরও বেড়ে যায়। সরকার সবই হিসাব করে, করে না শুধু আমাদের মতো মানুষের সংসার কীভাবে চলবে।’
কারওয়ান বাজার থেকে মাথায় করে তরিতরকারি বইয়ে দেন শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সবকিছুর দাম বাড়ছে। প্রতিদিন বাড়ছে। আজ যেটা এক টাকা দিয়ে কিনি। চারদিন পরে সেটা দেড় টাকা হয়ে যায়। এভাবেই চলছে অনেকদিন ধরে। কোনোকিছু কেনাকাটা করতে গেলেই হিসাব করতে হয়, দাম বাড়ছে কত। বাজেট আপনারা থাকেন, আমার ছেলে-মেয়ের মুখে দু-মুঠো ভাত জুটলেই হলো।’