আ.লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বিএনপি
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. নাসিম বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার দল বিএনপি বারবার আন্দোলন ও নির্বাচনের মাঠ থেকে পালিয়ে আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।’
আজ রোববার দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. নাসিম এ মন্তব্য করেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে করে মো. নাসিম বলেন, ‘আগামীতে চক্রান্তের দিন আসবে। বিএনপি-জামায়াত আবারও ছোবল মারার চেষ্টা করবে। সব চক্রান্ত মোকাবিলা করে রাজপথ বা নির্বাচন যেকোনো লড়াইয়ে পরাজিত করে বিএনপি-জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করবে আওয়ামী লীগ।’
খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে উচ্চ আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হট্টগোল প্রসঙ্গে নাসিম বলেন, ‘আদালতে গুণ্ডামি করলে রাজপথে থেকেই জবাব দিবে আওয়ামী লীগ।’
নাসিম বলেন, ‘ক্ষমতায় আছি বলে আত্মতৃপ্তিতে থাকা যাবে না। বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আবারও নতুন করে প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী দিনের সংগ্রামের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
মো. নাসিম বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে আবারও নতুন করে চক্রান্ত হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত বিষাক্ত সাপ। তারা সুযোগ পেলেই ছোবল দেবে। তাই দেশের মানুষকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে একই পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যেন সব অপশক্তির বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করা যায়।’
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে মো. নাসিম ১৫ আগস্টের ঘটনার জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি তথ্য-উপাত্তসহ বলতে পারি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল চক্রান্তকারী ও খলনায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান। তাই কমিশন গঠন করে তার মরণোত্তর বিচার করতে হবে।’
বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা, রায়, কারাগারে আটক থাকা এবং তাঁর মুক্তির প্রসঙ্গ টেনে নাসিম বলেন, ‘বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল ১/১১-এর সময়। দুর্নীতির ওই মামলাতেই তাঁর সাজা হয়েছে। তিনি জেলে গেছেন। এখন জামিন দেওয়া না দেওয়ার বিষয়টি আদালতের হাতেই ন্যস্ত। এখানে সরকারের কোনো হাত নেই। আদালতের মাধ্যমেই বেগম জিয়ার সাজা হয়েছে। তাই আদালতের মাধ্যমেই বেগম জিয়াকে মুক্ত হতে হবে।’
এর আগে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন নাসিমসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম।
রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক এই সম্মেলন চলে দুপুর পর্যন্ত। মঞ্চে আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহা. আসাদুজ্জামান।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক ও প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান খান।
সম্মেলনে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আদিবা আনজুম মিতা।
এর আগে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আজ অনুষ্ঠিত হলো সম্মেলন।
পরে বিকেলে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শুরু হয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন।