আলোচিত পর্দা কেলেঙ্কারি : ফরিদপুর মেডিকেলের দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আলোচিত ‘পর্দা কেলেঙ্কারি’সহ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক দুই প্রকল্প পরিচালক—অধ্যাপক ডা. আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও ডা. গণপতি বিশ্বাসকে দুর্নীতির দায়ে চাকরি হতে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সাবেক দুই প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও ডা. গণপতি বিশ্বাসের দুর্নীতির বিবরণ উল্লেখ করে তাঁদের চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের প্রস্তাব সংবলিত সারসংক্ষেপে রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন করেন। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর উল্লিখিত দুই কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) রোগীকে আড়াল করে রাখার এক সেট পর্দার দাম পড়েছে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। শুধু এ পর্দা নয়, কলেজের বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনাকাটায় প্রায় ৪১ কোটি টাকার দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তদন্তে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রের মাধ্যমে ২০১২-১৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্পে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স অনিক ট্রেডার্স ফমেক হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও মালামাল সরবরাহ করে। প্রতিষ্ঠানটি সরবরাহ করা মালামালের দাম কয়েকগুণ বেশি নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবিশ্বাস্য দামে ফমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৬৬টি চিকিৎসা যন্ত্র ও সরঞ্জাম কিনেছে।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানিয়েছে, ২০১২-১৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্পে হাসপাতালটি ১১ কোটি ৫৩ লাখ ৪৬৫ টাকার মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনাকাটা করে। এতে বিল দেখানো হয়েছে ৫২ কোটি ৬৬ লাখ ৭১ হাজার ২০২ টাকা। এ কেনাকাটাতেই মেসার্স অনিক ট্রেডার্স বাড়তি বিল দেখিয়েছে ৪১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৩৭ টাকা। এতে সাবেক দুই প্রকল্প পরিচালক প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে তদন্তে ওঠে আসে।