ইউএনওর হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল কিশোরী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে এক কিশোরী (১৩)। কিশোরী সায়মা সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বেহাইর গ্রামের জুরু মিয়ার মেয়ে। সে বটতলী বাজার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
জানা যায়, আগামীকাল শুক্রবার একই গ্রামের তোফাজ্জল (২৫) নামের এক যুবকের সঙ্গে সায়মার বিয়ের দিন ধার্য ছিল। বিয়ের সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন। তবে বাল্যবিবাহের অভিযোগ পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া আজ বৃহস্পতিবার সকালে বর ও কনেপক্ষকে তাঁর অফিসে তলব করেন। এ সময় তিনি বর ও কনেসহ উভয়পক্ষের অভিভাবককে বাল্যবিবাহের কুফল এবং শাস্তির বিষয়ে জানান। দুই পক্ষকেই বাল্যবিবাহ বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
এ সময় উভয় পক্ষই এ বিয়ে বন্ধ করবে বলে মুচলেকা দেয়। এ ছাড়া কিশোরীর বাবা দরিদ্র হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন ভট্টাচার্য্যকে মেয়েটির পড়াশোনা চালিয়ে নিতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ সময় কিশোরীকে শিক্ষাসহায়ক সরঞ্জাম কেনার জন্য নগদ দুই হাজার টাকা দেন তিনি।
শেষ মুহূর্তে বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা এবং নতুন করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় ওই কিশোরী আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। এজন্য সে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়াকে ধন্যবাদ জানায়।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি রেখেছে। বেহাইর গ্রামের বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে ওই কিশোরীকে রক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি তার পাড়াশুনা চালিয়ে যেতে সরকারি সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত মাসে ১২টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসহ একাধিক ব্যক্তিকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে।’
বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পাশাপাশি সামাজিকভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে জানান ইউএনও।