ইতিহাস অস্বীকারকারীরা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয় : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেছেন, যারা ইতিহাসকে অস্বীকার করে, তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘৭ জুন আমাদের ইতিহাসের অংশ, ছয় দফা আমাদের মুক্তির সনদ। এটি যারা পালন করে না, তারা প্রকৃতপক্ষে ইতিহাসকে অস্বীকার করে। কারণ ৭ জুন পালন করলে তো যে সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, তাকে স্বীকার করা হয়। সেটিকে অস্বীকার করার জন্যই তারা সচেতনভাবে ৭ জুন পালন করে না। কারণ ইতিহাস বিকৃত করে তারা বলতে চায়, একজন শিঙ্গা ফুঁকেছিল, সেটি শুনে সবাই যুদ্ধে গিয়েছিল এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। কিন্তু বিষয়টি তা নয়।’
বহু আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু এ দেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘‘১৯৫১ সালে বঙ্গবন্ধু যখন জেলে ছিলেন, তখন কমরেড মণি সিংহকে চিঠি লিখেছিলেন যে, ‘আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করছি, আপনার এতে সমর্থন আছে কি না?’ অর্থাৎ ১৯৫১ সালের আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন। এই ঐতিহাসিক সত্যগুলোকে বিএনপি পালন করে না ইতিহাসকে অস্বীকার করার জন্য। কিন্তু যারা ইতিহাসকে অস্বীকার করে, তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। বিএনপিও ইতিহাসকে অস্বীকার করলে একদিন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়েই নিক্ষিপ্ত হবে।’’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন তা ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ। তিনি স্বাধীনতার লক্ষ্যে বাঙালির মনন তৈরি করার জন্যই ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। সেটির ভিত্তিতেই ১৯৭০ সালে নির্বাচন হয়েছিল এবং এই নির্বাচনে জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল এবং তারই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণমাধ্যমবান্ধব সরকার উল্লেখ করে ড. হাছান জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ দুর্যোগের সময় বিপদগ্রস্ত সাংবাদিকদের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কাছ থেকে পাওয়া গেলে আগামী সপ্তাহে আমরা সহায়তা প্রদানের জন্য তালিকা চূড়ান্ত করতে পারব বলে আশা করছি। মন্ত্রী এ সময় করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিকদের দ্রুত আরোগ্য এবং করোনা ও এর উপসর্গে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিকদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের এ সময় চাকুরিচ্যুতি না করার অনুরোধ জানিয়ে সব পত্র-পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারির এ পরিস্থিতিতে মানুষ অত্যন্ত অসহায়। যারা বিভিন্ন কাজ করছেন, চাকরি করছেন তারাও অসহায়। আমি আগেও অনুরোধ জানিয়েছি, আবারও অনুরোধ জানাই, এ পরিস্থিতিতে কাউকে যেন চাকরিচ্যুত না করা হয়। সেই সঙ্গে সবার বেতন-ভাতাও যেন নিয়মিত পরিশোধ করা হয়। কারণ এ সময়ে চাকরিচ্যুতি অত্যন্ত অমানবিক। আমি সেটি না করার জন্য অনুরোধ জানাই।’
বিএফইউজের মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম তপু ও উপস্থিত সীমিতসংখ্যক গণমাধ্যম প্রতিনিধি এ সময় গণমাধ্যমে ছাঁটাই বন্ধে মালিকদের প্রতি আহ্বানের জন্য তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।