‘করোনা প্রতিরোধে গুরুত্ব দেয়নি সরকার, সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশ। মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশ তা প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ নিলেও বর্তমান সরকার যথাসময়ে এই বিপর্যয়কে গুরুত্ব দেয়নি। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে। প্রায় দুই মাস সময় পেলেও সরকার এ বিষয়ে ভ্রুক্ষেপহীন থেকেছে। এই অবহেলা জনগণ মেনে নেবে না। সরকারের ক্ষমাহীন উদাসীনতার কারণে একটা বড় ধরনের বিপদ আমাদের সামনে ধেয়ে আসছে।’
আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের প্রধান কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি নেতা আরো বলেন, ‘ভাইরাসে সংক্রামকদের চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্ধারণ, সংক্রামক শনাক্তকরণসহ চিকিৎসক-নার্সদের প্রয়োজনীয় পোশাক (পিপিই) ও যন্ত্রপাতি কোনো কিছুই সরকার ব্যবস্থা করতে পারেনি। ঢাকার বাইরে কোনো হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত বা আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিদের থাকা-খাওয়া এবং আসবাবপত্র নেই। নেই চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় পোশাক ও ওষুধ। চিকিৎসকরা, বিশেষ করে আউটডোরে যারা চিকিৎসা দেন, সেই ইন্টার্নিরা ‘পিপিই’ পরিধান না করলে তারা নিজেরাই আক্রান্ত হবেন, আর একজন চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়া মানে শত শত নতুন রোগী সৃষ্টি করা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে নিরাপত্তা পোশাকের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ইন্টার্নশিপ চিকিৎসকরা।’
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো, দেশের মধ্যে যাদের করোনা হয়েছে, তারা কোনো হাসপাতালে ভর্তি হলেও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এমনকি জানতেও পারছেন না যে, এটা করোনাভাইরাস, না অন্যকিছু!’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে যে বিপর্যয় ঘটবে তা নিয়ে সবাই শঙ্কিত। অথচ সরকার এ নিয়ে কোনো পূর্ব প্রস্তুতি বা পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কারণ জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। এমন ভয়াবহ দুর্যোগময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সক্ষমতা এবং শক্তি এই সরকারের নেই। জাতীয় ঐক্যের সৃষ্টি করে করোনাভাইরাসের মহাদুর্যোগ সামাল দিতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই মহাবিপদের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জীবন ও স্বাস্থ্য নিয়ে। তাঁকে মুক্তি দিয়ে জাতীয় দুর্যোগে সবাই এক হয়ে কাজ করা জরুরি। জাতির এই মহাক্রান্তিকালে প্রতিহিংসাপরায়ণতা ভুলে এই মুহূর্তে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘করোনা আতঙ্কে মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা চাল-ডাল-পেঁয়াজ-রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ইচ্ছে মতো বাড়িয়ে দিয়েছে। দামের উল্লম্ফনে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই! বাংলাদেশ ব্যাংক বড়লোকের ঋণ স্থগিত করেছে কিন্তু গরিবের ঋণকিস্তি স্থগিত করেনি। অবিলম্বে গরীবের সব ঋণকিস্তি স্থগিতের দাবি জানাচ্ছি।’
এ সময় আজ ঢাকা-১০ আসনে জাতীয় সংসদ উপনির্বাচনে বিএনপির এজেন্ট ও সমর্থকদের আটক করেছে পুলিশ। আটকদের মধ্যে রয়েছেন ধানের শীষের এজেন্ট অ্যাডভোকেট মাসুম, হাজারীবাগ থানা বিএনপির সহসভাপতি হেদায়েত উল্লাহ, হাজারীবাগ থানা যুবদলের সভাপতি আবুল খায়ের লিটন, হাজারীবাগ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. সুমন, হাজারীবাগ থানা যুবদলের সদস্য মো. সেলিম, সাইদুল ইসলাম শিশির ও আমির হোসেন লিটন, ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. শিমুল এবং বিএনপি সমর্থক জাকির।