নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় এক কলেজছাত্রীর (১৮) মাথার চুল কেটে, অশ্লীল ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছাড়ার হুমকি দিয়েছে এক বখাটে। এ ঘটনায় কলেজছাত্রীর বাবা আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে থানায় মামলা করলে অভিযুক্ত রায়হানকে (২৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত রায়হান উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের ঝাজিরা গ্রামের বাসিন্দা।

অভিযোগ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেল ৫টার দিকে ওই কলেজছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে রায়হান ও তাঁর স্ত্রী মাথার চুল কেটে ও মারধর করে অশ্লীল ছবি তোলেন।

ভিকটিম কলেজছাত্রী বলেন, ‘রায়হান এক মাস ধরে আমাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিতেন। আমি রাজি না হওয়ায় রোববার বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষে এক স্যারের কাছে প্রাইভেটের টাকা দিতে গেলে বালাহৈর জামে মসজিদের কাছে এলে রায়হান ও তার তিন বন্ধু আমাকে জোরপূর্বক তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। দেড় ফুট লম্বা মাথার চুল কেটে ফেলে এবং আমার খারাপ ছবি তুলে হুমকি দেন। আর যদি এসব কাউকে বলি তাহলে আমাকে মেরে ফেলবে।’

ওই কলেজছাত্রী আরো বলেন, ‘আমাকে দুই ঘণ্টা ঘরে আটকে রেখে আমার অশ্লীল ছবি তুলে সন্ধ্যা ৭টার পরে থানায় নিয়ে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে। পরে আমার নানা থানায় এসে আমাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। রাত ১২টার দিকে শারীরিকভাবে বেশি অসুস্থ হলে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করান।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রায়হান বলেন, ‘ওই মেয়ে তিন-চার দিন আগে আমার বাসায় এসে আমার স্ত্রী রূপাকে একটি ছেলের সঙ্গে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেন। আমি সেদিন রাজশাহী গিয়েছিলাম। আমি বাড়ি এলে আমার স্ত্রী রূপা বিষয়টি আমাকে জানালে আমি সেদিন থেকে তাঁকে খুঁজছিলাম। গত রোববার বিকেল ৫টার দিকে তাঁকে বালাহৈর জামে মসজিদের কাছে পেলে আমার স্ত্রীর কাছে নিয়ে গেলাম চেনার জন্য। আমার স্ত্রী রূপা তাঁকে চিনতে পারে। তাঁকে ছেলেটির সম্পর্কে জানতে চাই। তিনি ছেলেটির কোনো পরিচয় না দিলে আমরা তাঁর অভিভাবকে ডাকতে বলি। তিনি অভিভাবকে না ডাকায় আমার স্ত্রী তাঁকে সামান্য চড়-থাপ্পড় দিয়ে মাথার চুল কেটে দেয়। যাতে পরবর্তীতে আর কোনো খারাপ কাজ করতে না পারে।’

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ন কবির বলেন, ‘মেয়েটির বাবা সোমবার দুপুরে থানায় বাদী হয়ে মামলা করলে অভিযুক্ত রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’