কালকিনি পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ
মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার মেয়র মো. এনায়েত হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে হতদরিদ্রদের প্রায় সাত মেট্রিক টন জিআরের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ এনে গতকাল বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কাউন্সিলরা। যদিও মেয়র এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও জেলা প্রশাসন শাখা সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে হতদরিদ্রদের জন্য জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখা থেকে কালকিনি পৌরসভার হতদরিদ্রদের জন্য চার কিস্তিতে প্রায় সাত মেট্রিক টন চাল ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই বরাদ্দ কাউন্সিলরদের না জানিয়ে মেয়র নিজে তুলে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগকারীদের মধ্যে পৌরসভার ১, ২, ৩, ৫, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ১, ২ ৩ ও ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর রয়েছেন।
কাউন্সিলরা অভিযোগ করেন, মেয়র কোনো সভা না করে এই চাল উত্তোলন করেছেন। কোথায় তা বিতরণ করেছেন তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পৌরসভার হতদরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষ সরকারের ত্রাণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন কাউন্সিলররা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পৌরসভার পক্ষে গত ২৫ মার্চ দেড় মেট্রিক টন, ২৯ মার্চ ০.৩৭৫ মেট্রিক টন, ৬ এপ্রিল দুই মেট্রিক টন, ৮ এপ্রিল তিন মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করা হয়। এসব চাল কালকিনি উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করে পৌর কর্তৃপক্ষ।
কালকিনি উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে বরাদ্দকৃত জিআর চাল বিভিন্ন তারিখে কালকিনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ উত্তোলন করে। মোট বরাদ্দকৃত চালের পরিমাণ ছয় হাজার ৯৮৫ কেজি।’
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কাউন্সিলরদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। গরিবের চাল আত্মসাতের ঘটনা ঘটলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে কালকিনি পৌরসভার মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাড়ে ছয় মেট্রিক টন চাল পাওয়া গেছে। এসব চাল পৌরসভার হতদরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। প্রত্যেকের ভোটার আইডি কার্ড, মোবাইল নাম্বারসহ তালিকা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে।’
তাহলে কেন কাউন্সিলররা এই অভিযোগ করলেন- জানতে চাইলে মেয়র আরো বলেন, ‘শত্রুতা করে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। পৌরসভা থেকে চাল বিতরণ সংক্রান্ত মিটিংয়ে তাদের ডাকা হলেও অভিযোগকারী কাউন্সিলরা কেউ আসেননি। পুরোপুরি স্বচ্ছতার সঙ্গে বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ করা হয়েছে। এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি।’