কুড়িগ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গরিবের সুপার শপ
দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কুড়িগ্রামে বসেছিল গরিবের সুপার শপ। আজ মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি ২০২৩) সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সুভারকুঠি গ্রামে বসে এই গরিবের সুপার শপ।
এই সুপার শপ থেকে নামমাত্র মূল্যে চাল, ডাল, তেল, আটা, লবণ, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পেরে খুশি দরিদ্র মানুষজন। গরিবের সুপার শপ উদ্বোধনী দিনে প্রায় ২৫০টি পরিবার এ সুবিধা পেয়েছে। এ বাজার থেকে এক টাকায় এক কেজি চাল, দুই টাকায় এক কেজি ডাল, তিন টাকায় এক লিটার তেল, এক টাকায় দুই কেজি আলু, চার টাকায় একটি ব্রয়লার মুরগি, সাত টাকায় কম্বলসহ দুটি জামা কেনার সুবিধা পেয়েছে দরিদ্র পরিবারগুলো। এই মূল্যে সর্বোচ্চ ১০ টাকার পণ্য কেনার সুযোগ পেয়েছে প্রতিটি পরিবার। যার বাজার মূল্য ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত দরিদ্র মানুষকে পণ্য বাছাই করার স্বাধীনতা দেওয়ার জন্যই এই বাজারের আয়োজন। এই এলাকায় প্রতি মাসে একদিন করে বসবে এই বাজার।
বিদ্যানন্দের মানবিক ও ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেদুল হাসান।
একই দিনে স্থানে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের নিজস্ব জমিতে নবনির্মিত হজরত আয়েশা (রা.) এতিমখানার শিক্ষা কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করা হয়। এখানে তিনতলাবিশিষ্ট ভবনে প্রায় শতাধিক দরিদ্র ও এতিম মেয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে। গরিবের সুপার শপ কার্যক্রমের পাশাপাশি এ জেলায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ পাতিলে প্রায় দেড় হাজার মানুষের রান্নার আয়োজন করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। এসব খাবার স্থানীয় গরিব ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিন জানান, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পছন্দ মতো নামমাত্র মূল্যে বাজার করার জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে পরিবারের কর্তাব্যক্তি তার পছন্দের বাজার নিয়ে বাড়িতে ফিরে সন্তানদের কাছে সুপার হিরো হতে পারেন। যাতে একদিনের জন্য হলেও তাঁরা নিজেদের সুখি ভাবতে পারেন।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এটি একটি প্রশংসনীয় মানবিক কাজ। বিভিন্ন দুর্যোগে তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায়। জেলার সুবিধা বঞ্চিত ও দরিদ্র মানুষদের জন্য এ আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। পাশাপাশি এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এতিমখানাটিতেও শতাধিক মেয়ে শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতে পারবে। জেলা প্রশাসন তাদের এ ভালো কাজের পাশে আছে।
উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে ১১ ফিট ব্যাস ও সাড়ে সাত ফিট উচ্চতার পাতিলে একসঙ্গে প্রায় ১০ হাজার মানুষের খাবার রান্না করা যায়। সৈয়দ এফ এম জাহিদুল হক নামের এক দানবীর ব্যক্তি ২০ বছর আগে আজমীর শরীফের পাতিলের অনুকরণে এটি তৈরি করেন। তার মৃত্যুর পর তার পরিবার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে এই পাতিলটি রান্নায় ব্যবহারের জন্য দান করেন। মূলত বন্যা, কোরবানি, রমজানের সময় হাজার হাজার মানুষের রান্নার প্রয়োজনে এই পাতিলটি ব্যবহার করা হয়।