কুড়িগ্রামে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় থানায় অভিযোগ
কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এক সহকারী শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ভর্তি বাতিলকৃত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
আজ রোববার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী চারজন অভিভাবকের নামে এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ভর্তি বাতিলের বিষয়টি জানতে চায় এবং প্রধান শিক্ষকের হাতে পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা দেয়। এরই মধ্যে মাসুদ রানা নামের এক অভিভাবকের সঙ্গে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকীর কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে অভিভাবক মাসুদ রানা, রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও বিদ্যুৎ নামের অভিভাবকসহ কয়েকজন ওই শিক্ষকের ওপর চরাও হয়। ধাক্কা মেরে কক্ষের এক কোনায় নিয়ে যায়। পরে কিল-ঘুষি মারেন।
এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক।
অভিভাবকরা জানান, সন্তানদের ভর্তি বাতিলের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য তারা প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন জমা দিতে যান। এ সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল হাই।
সরকারের সঙ্গে অভিভাবক মাসুদ রানার বিতর্ক হয়। এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। পরে অন্যান্য শিক্ষকরা উত্তেজিত হলে অভিভাবক মাসুদ রানাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। মাসুদ রানা জেলা বিএনপির সহ ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী একাধিক আবেদনের কারণে মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে মাসুদ রানা আমার ওপর চড়াও হয় এবং কিলঘুষি মারে। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আমি বিচার চাই।’
অভিযুক্ত মাসুদ রানা বলেন, ‘লটারিতে তালিকায় থাকায় আমার সন্তানকে গত ২২ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করাই। তারা ২৮ ডিসেম্বর সে ভর্তি বাতিল করে। ভর্তি পুনর্বিবেচনার আবেদন দিতে এলে অন্যান্য অভিভাবকদের মতো ওই শিক্ষকের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এখানে হাতাহাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ছাত্র ভর্তির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বিদ্যালয়ের ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী ডিসেম্বরের ১৮ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ছাত্র ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর ভর্তিকৃত ছাত্রদের নামে একাধিক আবেদন করার অভিযোগে গত ২৮ ডিসেম্বর ৪২ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বালিত করা হয়।