কোরবানির হাট মাতাবে বাংলার ডন ও মাফিয়া
কোরবানির ঈদে কুষ্টিয়ার গরুর বেশ চাহিদা রয়েছে। ঈদকে ঘিরে তাই এই এলাকার খামিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। মোটাতাজাকরণের পাশাপাশি গরুর দেখভালে বাড়তি সময় দিচ্ছেন তাঁরা। খামারিরা মনে করছেন, দেশে এবার সেরা গরুর তালিকায় থাকবে কুষ্টিয়া। হাট মাতাবে ‘বাংলার ডন’ ও ‘মাফিয়া’।
কুষ্টিয়ার বড় আইলচারা গ্রামের বোরহান মণ্ডল অনেক বছর ধরে কোরবানির গরু মোটাতাজা করে আসছেন। এবারও কোরবানির জন্য দুটি গরু প্রস্তুত করেছেন তিনি। কালো রঙের বিশাল দেহী গরুটির নাম রাখা হয়েছে—বাংলার ডন। আর সাদা কালোটির নাম—বাংলার মাফিয়া।
খামারি বোরহান মণ্ডল জানান, দেড় বছর আগে দুটি গরু কিনেছেন। এরপর পরিমান মতো কাঁচা ঘাস, ছোলা, ডাল, ভুট্টা, সাবুদানা ও খড় খাওয়ায়ে পারিবারিক আদলে সন্তানের মতো লালন পালন করেছেন তিনি। প্রতিদিন নিয়ম করে তিনবেলা গোসল করানো হয়। নিয়মিত ডাক্তারও দেখানো হয়। পরিবারের অন্যরাও ব্যাস্ত থাকেন গরু দুটি লালন পালনে।
বোরহান মণ্ডল গরু দুটি বিক্রি করতে চান ৩০ লাখ টাকায় ।
কোরবানি উপলক্ষে পশুপালন করে প্রতিবছর লাভবান এ এলাকার নারীরাও। কুষ্টিয়ার বড় আইলচারা গ্রামের আফরোজা খাতুন এবারের কোরবানির জন্য দুইটি বিশাল আকারের খাশি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। নাম রেখেছেন ‘রাজা’ ও ‘বাদশা’। গত কোরবানি ঈদের পর ৮০ হাজার টাকা দিয়ে ছাগল দুটি কিনে লালনপালন করেছেন আফরোজা। এবারের কোরবানি ঈদে ছাগল দুটি বিক্রি করতে চান দুই লাখ টাকায়।
জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, এ বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলার ছোট-বড় ৩৫ হাজার খামারে এক লাখ ৮০ হাজার গরু, ছাগল ও মহিষ প্রস্তুত করা হয়েছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর কুষ্টিয়ায় গরু লালনপালনের সংখ্যা বেড়েছে। দেশীয় খামারিদের তৈরি গরুতেই এবারের কোরবানির চাহিদা পূরণ হবে। ন্যায্য দামও পাবে খামারিরা।
গত দুই বছর করোনাভাইরাসের কারণে চরম লোকশান গুনতে হয়েছে জেলার খামারিদের। এবারের কোরবানিতে সেই লোকশান কিছুটা হলেও পুশিয়ে নিতে চান তাঁরা। ফলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে পশুর।