গণতন্ত্র ফেরাতে অদৃষ্ট নয়, আন্দোলনের আহ্বান গয়েশ্বরের
অদৃষ্টের ওপর নির্ভর করে নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাঠে প্রতিবাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
বিএনপির নেতা বলেন, ‘মানববন্ধন বা প্রতিবাদ করে মুক্তির পথ হবে না। আমাদের লড়াই করতে হবে। আজ এই মাস বিজয়ের মাসের শেষ দিন। যে বিজয় নিয়ে গর্ব করি সেই বিজয় কিন্তু লড়াই ছাড়া আসেনি। সংগ্রাম ছাড়া আসেনি ও রক্ত ছাড়া হয়নি। সেকারণেই আমাদেরকে জীবনযুদ্ধে যেমন করোনাকে উপেক্ষা করে ছোটাছুটি করি, তেমনি স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ববোধ থেকে এই সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে মাঠে-ময়দানে ছোটাছুটি করতে হবে। তাছাড়া কিন্তু আমাদের পরিত্রাণ পাওয়ার অন্য কোনো পথ নেই।’
নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ আহ্বান জানান তিনি। টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌর মহিলা দলের সভানেত্রী হাবিজা বেগমের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা ও তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা এবং দেশব্যাপী নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এই মানবনবন্ধন করে সংগঠনটি।
নতুন বছরে স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ববোধ থেকে লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, কোনো অধিকারই সংগ্রাম ছাড়া হয় নাই। বিএনপির তো সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। বিএনপি প্রতিষ্ঠিত করেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি লড়াই করেছেন, যুদ্ধ করেছেন। তিনি প্রথম পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। উর্ধ্বতন কমান্ডারকে গুলি করে হত্যা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করেছেন। তারপর নেতৃত্ব দিয়েছেন খালেদা জিয়া। রাজপথে মশাল হাতে ঢাকার অলিতে-গলিতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। সেই কারণে খালেদা জিয়া আপসহীন নেত্রী। আপসহীন নেত্রীর কর্মীরা যদি আপসকামী হয়, তাহলে তো সরকার অবজ্ঞা করবেই, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবেই।
এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘আসুন, সরকারটাকে নামানোর জন্য একটু চেষ্টা করি। চেষ্টা করলে সফলও হতে পারি, ব্যর্থও হতে পারি। কিন্তু চেষ্টা না করে সফলও হইলাম না ব্যর্থও হইলাম না। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, কাপুরুষ এবং মুর্খরা অদৃষ্টের ওপরে নির্ভর করে। আর বীরপুরুষরা নিজেদের অদৃষ্ট নিজেরা গড়ে তোলে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল বলেন, বিএনপি করার কারণে হাবিজা বেগমকে জীবন দিতে হয়েছে। আজকে এই সমাবেশ থেকে আমরা বিচার চাইব, বিচার আমরা পাব না। এই সরকারের কাছে নারী হত্যার বিচার চেয়ে লাভ নেই, নারী ধর্ষণের বিচার চেয়ে লাভ নেই, শিশু হত্যার বিচার চেয়ে লাভ নেই, কোনো হত্যার বিচার চেয়ে লাভ নেই, কোনো অন্যায়ের বিচার চেয়ে লাভ নেই।
সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, জেবা খান, রবিউল ইসলাম রবি, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সাবেক নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।