গণমাধ্যম, পোশাক ও বেসরকারি কর্মীদের বেতন-বোনাস পরিশোধের আহ্বান
২৭ রমজানের আগেই গণমাধ্যম, তৈরি-পোশাক ও বেসরকারি খাতের কর্মীদের বেতন-বোনাসসহ বকেয়া সব পাওনা পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, ‘ঈদের আনন্দ যেন কারও কাছে অধরা না থাকে।’
ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-এর কাউন্সিল হলে আজ রোববার বিকেলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এ আহ্বান জানান জিএম কাদের।
এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, অনেকগুলো গণমাধ্যমে বেশ কয়েক মাসের বেতন বকেয়া আছে। সেখানে কর্মরত সাংবাদিক ও স্টাফরা পরিবার-পরিজন নিয়ে সীমাহীন দুঃখ-কষ্টে আছেন।’
জিএম কাদের আরও বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতের লাখ লাখ শ্রমিক ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরেন। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শেকড়ের টানে ছুটে যান। তাই, গার্মেন্টস শ্রমিক ও বেসরকারি সব খাতে কর্মরতদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
জাতীয় পার্টির এ নেতা বলেন, ‘দেশের রপ্তানি আয় সচল রাখেন যে শ্রমিকেরা, তাঁরাই সবচেয়ে কম বেতনে চাকরি করেন। অথচ পোশাকশিল্প মালিকেরা দরিদ্র শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রাখেন।’ তাই, ২৭ রমজানের আগেই সবার পাওনা পরিশোধ করতে অনুরোধ জানান তিনি।’
এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বেতন বকেয়া হওয়ার কারণে বেসরকারি খাতের কর্মীরা অনেকে বাসা ভাড়া দিতে পারছেন না। পরিবারের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও অষুধের বন্দোবস্ত হচ্ছে না। অনেকেই সন্তানদের স্কুল-কলেজের বেতন বা কোচিং ফি দিতে পারছেন না। এমন বাস্তবতায় ঈদ আমাদের সামনে হাজির।’ সহায়তার হাত বাড়িয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
জিএম কাদের আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ সীমাহীন অর্থনৈতিক কষ্টে আছে। আর একদল মানুষ টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। সরকার তাদের তালিকা প্রকাশ করছে না। মনে হচ্ছে, সরকার পাচারকারীদের সহায়তা করছে। মানুষের মধ্যে চরম বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। অথচ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘যারা মানুষের কষ্টে চুপ করে থাকে, তাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার দরকার নেই।’
এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘সরকারি দলের দুর্নীতি ও দুঃশাসনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ঈদের পরে আমরা মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে রাজপথে থাকব।’ তিনি আরিও বলেন, ‘জাতীয় পার্টি করে কেউ অন্য দলের দালালি করতে পারবে না। দালালদের জায়গা জাতীয় পার্টিতে হবে না।’
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, ‘যখনই জাতীয় পার্টির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, তখনই ষড়যন্ত্র শুরু হয় জাতীয় পার্টিকে ঘিরে। আমরা অতীতের মতোই বুকের রক্ত দিয়ে জাতীয় পার্টিকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে মুক্ত করে গণমানুষের অধিকার আদায়ে রাজপথে থাকব।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু প্রমুখ।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, সোলায়মান আলম শেঠ, আব্দুর রশীদ সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, নাজমা আক্তার, সৈয়দ দিদার বখত, জহিরুল ইসলাম জহির, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের, চেয়ারম্যানের বিশেষ দূত মাশরুর মাওলা প্রমুখ।