গোপালগঞ্জে দুই মানবপাচারকারী ও বরগুনায় দুই অপহরণকারী গ্রেপ্তার

লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনায় গোপালগঞ্জ ও বরগুনায় চার মানবপাচারকারী ও অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে গতকাল বুধবার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুই মানবপাচারকারী ও বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের বরাত দিয়ে গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি মাহবুব হোসেন সারমাত জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল মুকসুদপুর উপজেলার যাত্রাবাড়ি ও লোহাইড় গ্রামে অভিযান চালায়। পরে ওই দুই পারচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মুকসুদপুর উপজেলার লোহাইড় গ্রামের সেন্টু সিকদার (৪৫) ও একই উপজেলার যাত্রাবাড়ি গ্রামের নার্গিস বেগম (৪০)।
র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, ওই দুই মানবপাচারকারী লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যা ও মুক্তিপণ আদায়ের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া তারা মুকসুদপুর উপজেলার কানুড়িয়া গ্রামের মো. বিল্লাল শেখের ছেলে মো. মাসুদ শেখকে লিবিয়ায় পাচার করে। সেখানে গিয়ে মাসুদ প্রতারিত হয়। এ ঘটনায় মাসুদের বাবা বিল্লাল শেখ বাদী হয়ে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিরাজগঞ্জ থেকে প্রতিনিধি শরীফুল ইসলাম ইন্না জানিয়েছেন, লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ডের পর মানবপাচারকারী ও অপহরণকারীদের ধরতে নজরদারি বাড়িয়েছে র্যাব। এর ধারাবাহিকতায় বরগুনার পাথরঘাটায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১২-এর সদস্যরা। পরে বুধবার রাতে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
সিরাজগঞ্জে র্যাব-১২-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বরগুনার খাসতবক গ্রামের বাসিন্দা মো. সজল (২৩) ও নাচনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ইদ্রিস আলী (৩৬)।
র্যাব-১২-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. খাইরুল ইসলাম জানান, বাগেরহাট সদর উপজেলার চুলকাঠি গ্রামের মো. আনোয়ার গাজীর ছেলে লিবিয়া প্রবাসী মুরশিদ গাজী ও বগুড়ার চারমাথা এলাকার আফসার আলীর ছেলে সাইফুল আলীসহ কয়েকজন বাংলাদেশি ও লিবিয়ার মানবপাচারকারী দ্বারা অপহৃত হন। অপহরণের পর লিবিয়ায় বাংলাদেশি অপহরণকারী চক্রের সদস্য সোহেল ও অন্যরা ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে অপহৃত মুরশিদ গাজীর বড় ভাই বেলাল গাজীকে ভুক্তভোগীদের ওপর নির্যাতনের একটি ভিডিও পাঠায় ও পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা।
র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, অপহরণকারী সোহেল মুক্তিপণের টাকা পেতে তাঁর ছোটভাই পাথরঘাটার বাসিন্দা সজল ও বিকাশের এজেন্ট ইদ্রিস আলীর নম্বর দেন। বেলাল গাজী সজলের মোবাইল নম্বরে কথা বলে বিকাশে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা দেন।
এ ছাড়া সজল ও ইদ্রিসের একাধিক মোবাইল নম্বরে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা বিকাশ করে অপহৃত সাইফুল আলীর পরিবার। ভিডিও, ফেসবুক ও মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে র্যাব-১২ ওই মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে। পরে গতকাল রাতে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।