ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সভা পণ্ড করার অভিযোগ এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষের
পাবনায় ছাত্রলীগ নেতা চাঁদা না পেয়ে মহান বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রস্তুতি সভা পণ্ড করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর মজুমদার এ অভিযোগ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই কলেজের ইতিহাস বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে সন্ধ্যায় পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ শিক্ষক পরিষদের এক জরুরি সভায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারসহ পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে।
শিক্ষক পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. এ কে এম শওকত আলী খান বলেন, ‘গতকাল মহান বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভা কলেজের ইতিহাস বিভাগে চলছিল। এ সময় কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সোহেল হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মী নয়ন, নাহিদ, শাহিনসহ ১৫ থেকে ২০ জন অধ্যক্ষের কাছে এসে চাঁদা দাবি করে। তাদের কথামতো তা দিতে অস্বীকার করায় তারা ওই সভায় প্রকাশ্যে অধ্যক্ষকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অপমান ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়।’
এ বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. পরিতোষ কুমার কুণ্ডু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমার বিভাগে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, যার জন্য সভাটি পণ্ড হয়ে যায়, যা সত্যিই কষ্টকর।’
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর মজুমদার বলেন, ‘সভা শুরুর পর কোনো কথাবার্তা ছাড়াই আমার পাশে এসে বসেন ছাত্রলীগ নেতা সোহেল। তিনি বিভিন্নভাবে আমাকে অপমান করার চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে গালিগালাজ করে হাত ধরে টানাহেঁচড়া করে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা চালান। এতো শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সামনে একজন ছাত্রলীগ নেতার এ ধরনের আচরণ সত্যিই দুঃখের। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসেন দীর্ঘদিন ধরেই আমার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। তাঁর দাবি পূরণ না করলে কলেজ ক্যাম্পাস অচল করে দেওয়ারও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
এ বিষয়ে এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসেন তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অসত্য ও ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, ‘আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই অধ্যক্ষ স্যার এই অভিযোগ করছেন। স্যার নিজেই একজন দুর্নীতিবাজ লোক। তাঁর বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করার জন্যই আমার বিরুদ্ধে তিনি এসব অপপ্রচার করছেন।’
সোহেল আরো বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছি। সেখানে আমি তাঁর নাম বলি নাই শুধু।’
তবে অনুষ্ঠান পণ্ড হওয়ার বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি এই ছাত্রলীগ নেতা সোহেল।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার পরপরই কলেজ থেকে কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছে। পরে খোঁজ-খবর নিয়ে কিছুটা সত্যতা পেয়েছি। আগামীকালই এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে সাংগঠনিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’