জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক তোয়াব খানের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত
বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানের দ্বিতীয় জানাজা জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১টায় প্রেসক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে কিংবদন্তি এ সাংবাদিকের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে তাঁর প্রথম জানাজা সকাল ১০টায় তেজগাঁওয়ের দৈনিক বাংলা কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। পরে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে তাঁর মরদেহ রাখা হয়।
জানাজা নামাজের আগে তোয়াব খানের ছোট ভাই ওবায়দুল কবির খান বলেন, ‘আমার বড় ভাই গত শনিবার দুপুরে মৃত্যুবরণ করেন। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ হচ্ছে, যদি তিনি কখনও আপনাদের সঙ্গে ভুল ব্যবহার বা অন্য কোনো কিছু করে থাকেন, তবে তাঁকে ক্ষমা করে দেবেন। একই সঙ্গে তাঁর আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন।’
জানাজায় অংশ নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তোয়াব খান বাংলাদেশের ইতিহাসের একজন কিংবদন্তি সাংবাদিক। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর অসামান্য অবদান ছিল। স্বাধীন বাংলার সঙ্গে কাজ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব হিসেবে কাজ করেছেন, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন এবং পিআইবির মহাপরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দৈনিক পাকিস্তান যখন নাম পরিবর্তন করে দৈনিক বাংলা হলো, সেটির প্রথম সম্পাদক ছিলেন তোয়াব খান। আজকের দিনে দৈনিক বাংলার সম্পাদক থাকা অবস্থায় তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশের বহু প্রথিতযশা সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে। তার লেখনি আমাদের দেশ ও জাতিকে উপকৃত করেছে। তিনি সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একজন পথিকৃত। তাঁর মৃত্যু আমাদের সাংবাদিকতা জগতের জন্য শুধু নয়, পুরো জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আজকে আমরা শোকে ভারাকান্ত। আমাদের সঙ্গে হয়তো প্রকৃতিও আজ কাঁদছে। প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য তোয়াব ভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমি সবাইকে বলব, আপনারা তাঁর জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাঁকে বেহেশত নসিব করেন।’
জানাজা শেষে তোয়াব খানের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতীয় প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ সাব এডিটর কাউন্সিল, দৈনিক প্রথম আলো, কালেরকণ্ঠ, জনকণ্ঠ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট, নারী সাংবাদিক কেন্দ্র, মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক ফোরামসহ অন্যান্য সংগঠন।
এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তোয়াব খানকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামের উপস্থিতিতে তাঁকে এ সম্মান দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর মরদেহে জাতীয় পতাকার সম্মান দেওয়া হয়।
শহীদ মিনারে বরেণ্য সাংবাদিক তোয়াব খানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতির পক্ষে তাঁর কার্যালয়ের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সহকারী সামরিক সচিব জিএম রাজিব আহমেদ, আওয়ামী লীগের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।