জিয়াউর রহমানকে শ্রেষ্ঠ করতে কাউকে ছোট-বড় করতে হয় না : গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘একদলীয় বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে সাধারণ মানুষ অনেক ওপরে স্থান দিয়েছে। জিয়াউর রহমানকে শ্রেষ্ঠ করতে কাউকে ছোট-বড় করতে হয় না।’
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁর উল্লেখযোগ্য বিষয় নিয়ে খ্যাতনামা জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর (জিয়াউর রহমান) কর্মকাণ্ডের তুলনা তিনি নিজেই। আমরা যেন ভুল করে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে অন্য কারও তুলনা করতে না যাই। জিয়াউর রহমান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ রোববার এ সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্রের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সর্বকালের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক। জিয়াউর রহমান একজন দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ছিলেন। জিয়াউর রহমান সর্বশ্রেষ্ঠ সংগঠক। একটি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সাংগঠনিক দক্ষতা দরকার। এটি অল্প সময়ের মধ্যে জিয়াউর রহমান করতে পেরেছিলেন। পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি মুক্তিযুদ্ধে সবাইকে মাঠে নামাতে পেরেছিলেন। এবং সম্মুখভাগে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে যুদ্ধ করেছেন। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় তিনি ইচ্ছা করে আসেননি। সিপাহী-জনতা তাঁকে উদ্বুদ্ধ করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এনেছে। জনগণ যে প্রত্যাশা নিয়ে জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নিয়ে এসেছিল, তিনি জনগণের সে প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছেন।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশকে একত্রিত করতে জিয়াউর রহমান সার্ক তৈরি করেছিলেন। সার্কের কার্যকারিতা না থাকায় দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশ্বের বড় দেশগুলো যখন আমাদের নিয়ে খেলবে, তখন আমরা বিপদে পড়ে যাব। এসব থেকে মুক্তি পেতেই জিয়াউর রহমান সার্ক গঠন করেছিলেন। এটিই জিয়াউর রহমানের দূরদর্শিতা।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে লাখ লাখ বেকারকে কাজে লাগাতে পারবেন না। তাই তিনি (জিয়াউর রহমান) শ্রমিক রপ্তানির ব্যবস্থা করেছিলেন। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করে বিদেশে শ্রমবাজার দখল করেন। যার রেমিট্যান্স এখন আমরা পাচ্ছি। বিদেশে শ্রমিক ও পোশাক শিল্পের রেমিট্যান্স দিয়েই বাংলাদেশ টিকে আছে। এটাই হলো জিয়াউর রহমানের দূরদর্শিতা। রেমিট্যান্স না এলে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হতো।’
জিয়াউর রহমানের কোনো স্বজনপ্রীতি ছিল না বলে জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘তিনি খাল খনন কর্মসূচি পালন করে সারা দেশে কৃষিক্ষেত্রে অভুতপূর্ব সাফল্য এনেছিলেন। ছাত্রদের তিনি শুধু রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি তাদের দিয়ে উৎপাদনমুখী রাজনীতি করাতে চেয়েছেন। যুবকদের তিনি বসিয়ে রাখেননি। যুবকদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে লাইসেন্স দিয়ে কাজে লাগিয়েছেন। জিয়াউর রহমানের স্লোগান ছিল—বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে কোনো প্রভু নেই। জিয়াউর রহমানই প্রথম ব্যক্তি (যিনি) সাতটি দেশের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসে আমেরিকা , রাশিয়া ও চীনে কূটনৈতিক মিশন চালু করেন।’
এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু এবং যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব উপস্থিত ছিলেন।