জি-কে সেচ প্রকল্পের তিন পাম্পের দুটিই বিকল, চাষিরা বিপাকে
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দেশের বৃহত্তর গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের তিনটি প্রধান পাম্পের দুটিই পড়ে আছে বিকল হয়ে। এতে স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা পাওয়া চাষিরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
ভরা আমন মৌসুমে কৃষকের জমিতে সেচের পানি নিশ্চিত করতে সরকার নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করলেও ভেড়ামারায় দেশের বৃহত্তর গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের তিনটি প্রধান পাম্পের মধ্যে দুটিই পড়ে আছে বিকল হয়ে। এতে স্বল্প খরচে তিন মৌসুমে নির্বিঘ্নে সেচ সুবিধা পাওয়া এ অঞ্চলের চাষীরা বেকায়দায় পড়েছেন। একটি সচল থাকলেও দুটি পাম্প বিকল থাকায় দুশ্চিন্তায় কর্তৃপক্ষও। দ্রুতই পাম্প দুটি মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
১৯৬২ সাল থেকে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরা জেলার ১৩টি উপজেলার প্রায় ৯৫ হাজার হেক্টর জমিতে স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা দিয়ে আসছে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্পটি। গত বছরের মে মাসে এই সেচ প্রকল্পটির ২ নম্বর পাম্পটি বিকল হয় এবং চলতি বছরে বিকল হয়ে পড়ে ৩ নম্বর পাম্পটিও। বর্তমানে সচল একটি মাত্র পাম্প দিয়েই চলছে সেচ কার্যক্রম। চলতি আমনের ভরা মৌসুমে বেশির ভাগ মাঠেই ডিজেলচালিত শ্যালোমেশিন দিয়ে সেচের পানির চাহিদা পূরণ করছেন তারা।
কুষ্টিয়া সদরের কুমারগাড়া এলাকার ধান চাষী সোনা মিয়া জানান, এমনিতেই সার ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে জমিতে চাষ-আবাদ করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এরপর আবার নতুন করে সেচের পানি সংকটে চরম বিপদ।
একই এলাকার কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন জিকে সেচ প্রকল্পের পানি দিয়ে জমি-জমা আবাদ করে আসছি। আমন ধানের মৌসুম চলছে। এখন জমিতে পর্যাপ্ত পানি দরকার। পাম্প নষ্ট থাকায় আমরা ঠিকমত পানি পাচ্ছি না। বর্তমানে তেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় এক বিঘা জমিতে ডিজেলে চালিত শ্যালো মেশিনে একবার সেচ দিতে খরচ হচ্ছে এক হাজার টাকা। এত টাকা খরচ করে আমাদের পক্ষে আর ধান আবাদ করা সম্ভব নয়।’
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘দুটি পাম্প বিকল থাকায় একটি মাত্র পাম্প দিয়ে সবোর্চ্চ সেচ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এতে কৃষকেরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিকল হওয়া পাম্প দুটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই এই সমস্যা সমাধান হবে।’
গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের তথ্য মতে, তিনটি পাম্প একসঙ্গে চালু থাকলে পদ্মা নদী থেকে প্রতি সেকেন্ডে তিন হাজার ৯০০ কিউসেক পানি আবাদি জমিতে দেওয়া সম্ভব হয়।