ঝিনাইদহে হতদরিদ্রদের হাতে ইউপি চেয়ারম্যান লাঞ্ছিত
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে হতদরিদ্ররা। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের ওপর চড়াও হয় এবং তাঁকে লাঞ্ছিত করে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সুজন মেম্বার জানান, ত্রাণ বিতরণের খবর পেয়ে সকালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের বাড়িবাথান, ফকিরাবাদ ও রাজাপুর গ্রামের কয়েকশ নারী-পুরুষ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে।
এ সময় চেয়ারম্যান বিক্ষুব্ধদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। এতে উপস্থিত জনতা আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারা চেয়ারম্যানকে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে লাঞ্ছিত করে। একপর্যায়ে পরিষদের অন্য মেম্বাররা তাঁকে জনতার রোষানল থেকে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে নিয়ে যান।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সময় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বদরুদোজা শুভসহ প্রশাসনের পদস্থরাও সেখানে ছুটে আসেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া ১০ মেট্রিক টন চাল ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতে এক হাজার হতদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আরো ৫০০ দরিদ্র মানুষের মধ্যে ত্রাণ দেওয়ার জন্য তালিকা করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে সেই ত্রাণ বিতরণ করার কথা ছিল।’ একটি বিশেষ মহল গুজব ছড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে লাঞ্ছিত করেছে বলে দাবি করেন ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) কয়েক দফায় ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে একই ইউনিয়নের অধীন ঝিনুকমালা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা ত্রাণের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ উপস্থিত থেকে প্রত্যেকের মাঝে ১০ কেজি চাল, নগদ একশ করে টাকা বিতরণ করেন।
এদিকে ত্রাণের দাবিতে আজ সকাল ১০টার দিকে শৈলকুপা উপজেলার ভাটাই বাজারের কয়েকশ নারীপুরুষ ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বজলুর রহমান জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা উপজেলার ১৫ নম্বর ফুলহরি ইউনিয়নের বাসিন্দা। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকসহ পুলিশ সেখানে যান এবং খাদ্য দেওয়ার আশ্বাস দেন। এর পর তারা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যায়।
এদিকে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যানের দলীয় মনোভাবের কারণে সরকারি ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।