ডিমান্ড থাকলে দেশে মাদকের সাপ্লাই হবেই : আইজিপি
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘কোনো মাদকই দেশে তৈরি হয় না। ফেনসিডিল আসে প্রতিবেশী এক দেশ থেকে, জনপ্রিয় মাদক ইয়াবা আসে প্রতিবেশী আরেক দেশ থেকে। এখন আবার আসছে আইস যা প্রতিবেশী এক দেশসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ থেকে আসে। ফলে দেশে মাদকের চাহিদা বন্ধ না করা গেলে কোনোভাবেই মাদকদ্রব্যের সাপ্লাই বন্ধ করা যাবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্রের (ওয়েসিস) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রিভারভিউ আবাসিক এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের এ মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মাদক তৈরি হয় না। আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে আমরা যে কাজটা করার চেষ্টা করি, সেটা হচ্ছে মাদকের সাপ্লাই কামানো। এসব দমনের জন্য ছয় থেকে সাতটা বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে।’
আইজিপি বলেন, ‘কাস্টমস বিভিন্ন পোর্টে মাদক দমনে কাজ করে। কিন্তু যদি ডিমান্ড থাকে, কোনো না কোনোভাবে দেশে মাদকের সাপ্লাই হবেই। আর সেটা যদি হয় এক কোটি, ৮০ লাখ ও ৩৬ লাখ তাহলে প্রত্যেক দিন এই মাদক কোনো না কোনোভাবে দেশে প্রবেশের চেষ্টা হবেই। সে কারণে অবশ্যই আমাদের মাদকের ডিমান্ড কমাতে হবে। ডিমান্ড কমাতে হলে যারা মাদকাসক্ত আছে, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেক্ষেত্রে ওয়েসিস আমাদের অতি ক্ষুদ্র একটি উদ্যোগ।’
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এনজিওসহ বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা ৮০ লাখ, আবার কেউ কেউ বলেন এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৮ সালে জনস্বার্থ ইনস্টিটিউটের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা ৩৬ লাখ। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে মোট বেড আছে মাত্র সাত হাজার। তাহলে এত সংখ্যক মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের আমরা কত বছরে চিকিৎসা দেব?’
পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের আরেকটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণের কথা উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমরা মানিগঞ্জের কালিগঙ্গা নদীর তৈরি মনোরম পরিবেশে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র বা হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি। সেখানে আমরা ইতোমধ্যে নদীর তীরে ২০ বিঘা জমি কিনেছি। আমি পারলে ১০০ বিঘা জমি কিনতে চাই। সেখানের পরিবেশে ঢুকলে মানুষের মন যেন ভালো হয়ে যায়। আমরা এমন একটি পরিবেশে ৫০০ থেকে এক হাজার বেডের হাসপাতাল তৈরি করতে চাই। এটাকে আমরা মাদক চিকিৎসার ক্ষেত্রে রিজনাল হাব করতে চাই।’