ঢাকা বার সুদবিহীন ঋণ দিচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার আইনজীবীকে
ঢাকা আইনজীবী সমিতি (ঢাকা বার) আইনজীবীদের আর্থিক সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকা সুদবিহীন ঋণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। সমিতির পাঁচ হাজার ৪৮৫ আইনজীবী আবেদনের ভিত্তিতে এই ঋণ পাবেন।
আজ শুক্রবার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে আাদালত বন্ধ থাকায় অধিকাংশ আইনজীবী বর্তমানে আর্থিক সমস্যায় আছেন। তাই সমিতির ২৩ সদস্যের কমিটি সুদবিহীন ঋণ প্রদানের জন্য সম্প্রতি সদস্য আইনজীবীদের কাছে দরখাস্ত আহ্বান করে।’
সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সমিতির আইনজীবী প্রায় ১৮ হাজার। তাঁদের মধ্যে সাত হাজার ৫১১টি আবেদন আমরা পাই। যাচাই-বাছাই করে পাঁচ হাজার ৪৮৫টি আবেদন যথাযথ বিবেচনায় তাদের ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যাদের মধ্যে বেনাভোলেন্ট ফান্ডধারী পাঁচ বছরের মধ্য সনদপ্রাপ্ত এক হাজার ৮০০ আইনজীবীকে ২০ হাজার টাকা করে, ৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে সনদপ্রাপ্ত দুই হাজার ৮৯০ জনকে ২৫ হাজার টাকা করে, ২৫ বছরের বেশি বয়সী সনদপ্রাপ্ত ৩৩৫ জনকে ৩০ হাজার টাকা করে এবং বেনাভোলেন্ট ফান্ড নেই এমন ৪৬০ জনকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মোট ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। আইনজীবীরা আগামী এক বছরের মধ্যে তা পরিশোধ করবেন।
এদিকে, ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ থাকায় সাধারণ আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঋণ প্রদানের শর্তের মধ্যে রয়েছে সমিতি থেকে সশরীরে ঋণগ্রহীতাকে টাকা উত্তোলন করতে হবে এবং সেই টাকা নেওয়ার সময় অঙ্গীকারনামা দিতে হবে।
ঢাকা বারের আইনজীবী রহমান জাহিদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সমিতিতে আমাদের নিজস্ব টাকা জমানো আছে। যাকে বলে বেনাভোলেন্ট ফান্ড। প্রতিবছর আমরা সমিতিতে নিদির্ষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিই। সেই টাকা জমে থাকে। এখন সারাবিশ্বে সমস্যার কারণে বিপদে পড়ে টাকা ঋণ নিতে হচ্ছে। কিন্তু আইনজীবী সমিতি আদালতে এসে টাকা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তাতে আইনজীবীদের মধ্যে করোনার আতঙ্ক বাড়িয়ে দেবে।’ তিনি বলেন, ‘তা ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখেছি, পুরান ঢাকায় সর্বাধিক করোনা রোগী রয়েছে। এ অবস্থায় আদালতে এসে টাকা নেওয়াটা অনেক রিস্ক।’
ঢাকা বারের সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘এ সময় গণপরিবহন বন্ধ। অনেক আইনজীবী ঢাকার বাইরে আছেন। আবার অনেকে উত্তরা, সাভার, মিরপুর থাকেন। তাঁরা কীভাবে আদালতে এসে টাকা নেবেন? এ জন্য কমিটির কাছে আবেদন করছি টাকা সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য।’