ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম সহ্য করা হবে না : প্রধানমন্ত্রী
সরকারি ত্রাণ বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ত্রাণ বিতরণে যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে দলমত বিবেচনা না করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ত্রাণ দেওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর সঙ্গে জড়িতরা যে দলেরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। গরিব মানুষের জন্য আমরা যে সহায়তা দেব, কেউ এর অপব্যবহার করবে, তা বরদাস্ত করব না। জড়িতরা আমার দলেরই হোক বা অন্য দলের, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান গ্রহণের সময় এসব কথা বলেন।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ৩০টিরও বেশি সরকারি সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং একজন সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাঁর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের হাতে অনুদান প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি মানুষ যেন সহায়তাটা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ত্রাণ বিতরণে কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে সরকার আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকটা জায়গায় আমরা এ সমস্যা পেয়েছি, তা খুব বেশি না। সব হিসাব করে দেখা গেল হয়তো পাঁচ থেকে সাত জায়গায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
সরকারের ত্রাণ সহায়তা নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি অনেকে, অনেক দল, সুশীল সমাজ বা অনেকেই কথা বলে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তারা মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসছে না।’
‘তারা শুধু চিৎকার করে যাচ্ছেন তারা কিন্তু একটা মানুষকেও একটি পয়সা দিয়েও সাহায্য করছে না। মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে না’- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সারা দেশে ঠিকমতো ত্রাণ দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে পাঁচ-সাতটা জায়গায় একটু সমস্যা হয়েছে; তা নিয়েই তারা কথা বলছেন।’
‘তারা শুধু কথা বিক্রি করেই যাচ্ছেন। সব সমাজেই এ ধরনের কিছু লোক থাকবেই। তারা কথা বেচেই যাবেন। এটাই তাদের পেশা,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে জনগণকে ত্রাণ সহায়তা দিতে আসা ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে নতুন বছরের শুভেচ্ছাও বিনিময় করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেওয়া সরকারি সংস্থাগুলো হলো- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমআরটিসিএল)।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় ও সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, বিসিএস ট্যাক্সেশন অ্যাসোসিয়েশন, ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি), ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইডিবি) ও ইইডি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন।
এ ছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড, উত্তরা গ্রুপ, ঢাকা ক্লাব, বিএসআরএম গ্রুপ, টেক্সকোটেক, কাশেম ট্রাস্ট, হামদর্দ ফাউন্ডেশন, গান বাংলা, শাওমি টেকনোলজিস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড, ইস্পাহানী চা লিমিটেড, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন, অলিলা গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এবং বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি।
এ ছাড়া সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের জন্য অনুদান দিয়েছেন।