দূতাবাসের মাধ্যমে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব না : দীপংকর
খাদ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাংসদ দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘আজ ঢাকায় সন্তু লারমার চুক্তি নিয়ে অনুষ্ঠানের কথা শুনেছি। সেখানে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে উনি আমন্ত্রণ জানাননি, বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতদের নিমন্ত্রণ করেছেন। দূতাবাসের মাধ্যমে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব না।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই যুগপূর্তি উপলক্ষে রাঙামাটিতে পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন দীপংকর তালুকদার।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে শান্তির প্রতীক পায়রা ও নৃত্যের মাধ্যমে সূচনার পর বর্ষপূর্তির আলোচনা সভা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে দীপংকর তালুকদার আরও বলেন, ‘অস্ত্রের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে না। যদি অস্ত্রের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতো তাহলে তাদের শান্তিচুক্তি করতেন না। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করবে আওয়ামী লীগ আর আপনি আওয়ামী লীগকেই নিশ্চিহ্ন করতে চান? এই পরিবেশটা নষ্ট করার দায় কি সরকারের?’
দীপংকর আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় জনসংহতি নেতা অভিযোগ করেন তাদের বিরুদ্ধে মামলার পর মামলা হচ্ছে। আপনারা মানুষ মারবেন, চাঁদাবাজি করবেন আর আমরা বিচার চাইতে পারব না?’
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রং চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাংসদ দীপংকর তালুকদার। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ইফতেকুর রহমান, ডিজিএফআইর অধিনায়ক কর্নেল সলমন ইবনে এ রইফ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর মোদাচ্ছের।
এ সময় বক্তারা বলেন, শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের দুয়ার খুলে যায়। বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতায় দুর্গম পাহাড়েও শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য সবক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শিতার নেতৃত্বে ও গুণে হানাহানিমুক্ত পার্বত্যাঞ্চল গঠন করা সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে সকালে শান্তিচুক্তির দুই যুগপূর্তি উপলক্ষে শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলার সদস্য ডা. গঙ্গা মানিকের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক কমরেড অশোক সাহা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মেঞ চিং মার্মা প্রমুখ।
জনসংহতি সমিতির উদ্যোগ আয়োজিত এ সভায় জনসংহতি সমিতির গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতাই ছিলেন না।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, জনসংহতি সমিতির হিসাব অনুসারে সরকার দুই যুগে চুক্তির ২৫টি ধারা বাস্তবায়ন করেছে, সে হিসেবে প্রতি বছর একটি করে ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে। এমন হলে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হতে আরও ৪৮ বছর লাগবে। সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক না বলে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই আগামী বছরের মধ্যেই যেন চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়।