‘দেশে এখন মুক্তবাজার অর্থনীতি নেই, আছে আওয়ামী অর্থনীতি’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আজ দেশে গণতন্ত্র নেই। আইনের শাসন নেই। বিএনপির ২৬ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। গুম হচ্ছে, খুন হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি রেখেছে। উন্নয়নের নামে চলছে লুটপাট। আসলে তারা প্রত্যেক জায়গায় রাজনীতিকীকরণ করেছে। কেবল আওয়ামী ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিচ্ছে। দলীয় লোক দিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দখল করেছে। বাংলাদেশে এখন মুক্তবাজার অর্থনীতি নেই। এখন আছে আওয়ামী অর্থনীতি। এভাবেই চলছে দেশ।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে দলীয় রাজনীতিতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন তারেক রহমান, যা ইতিহাসে লেখা থাকবে। কাউকে হত্যা করে ক্ষমতায় যাওয়ার দরকার বিএনপির নেই। কিন্তু যাদের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই, তারাই অপকর্ম করে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ খোঁজে।’
আজ শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার আবদুস সালাম হলে ‘নির্বাসিত তারেক রহমান ও বন্দি বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা অত্যন্ত উঁচু মানের। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনীতিতে দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। যদিও বিএনপিতে আগে থেকেই এটা ছিল। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া। এটা তারেক রহমান করেছেন। এটাকে দলের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়াটা ইতিহাসে লেখা থাকবে। তাঁকে ধন্যবাদ। তিনি কখনো কোনো আপস করেন না। প্রত্যেক অঙ্গসংগঠনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তিনি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি প্রতিদিন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। বিদেশে থেকে এ কাজ করা অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু তিনি সেটা করছেন।’
‘বিএনপির কাউকে মারার দরকার হয় না। বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। বিএনপি এমনিতেই অনেক এগিয়ে আছে। তারা কাউকে হত্যা করে ক্ষমতায় যাওয়ার দরকার নেই। বিএনপির ওপর মানুষের আস্থা আছে। কিন্তু সেই দল মানুষ মেরে ক্ষমতায় যায়, যাদের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই।’
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। গত ১০ বছর আগে যা ছিল, তা কমেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষের প্রকৃত আয়কে আরো কমিয়ে দিচ্ছে। জীবনযাত্রার মান কমেছে। কিন্তু জনগণ কথা বলছে না। মিডিয়া লিখতে ও বলতে পারে না। আসলে যে সরকার দেশে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। সেখানে তারা দ্রব্যমূল্যও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘সরকার কারো কাছে জবাবদিহি করে না। তারা তো ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। এ জন্যই তাদের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোনো আগ্রহ নেই। তাঁরা মনে করছেন যে জনগণের কাছে তো যাওয়া লাগবে না। তাই এভাবেই চলছে চলুক।’
সংগঠনের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বিএনপির সহপ্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপি নেতা মামুন বিন আবদুল মান্নানসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভার একপর্যায়ে তারেক রহমানকে নিয়ে একটি ভিডিও সংগীত পরিবেশন করা হয়। গানটি প্রযোজনা করেন মামুন বিন আবদুল মান্নান।