দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার : ড. মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘জনগণের প্রতি এই সরকারের কোনো রকমের দায়িত্ব নেই। জনগণের প্রতি তাদের কোনো দয়ামায়া নেই। তাই আজকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এই সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কারণ এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে মধ্যস্বত্বভোগীরা যারা লাভবান হচ্ছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগ করে বা আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।’
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ এবং সার, বীজ, কীটনাশক, ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত মানববন্ধনে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে প্রশাসনে দলীয়করণ করে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে ভেঙে দিয়েছে। তাই প্রশাসন থেকেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। প্রশাসনও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সহযোগিতা করে আজকে কৃষকের ন্যায্যমূল্য দিচ্ছে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে। তাদের গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যাবে না। তাই এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। আর বিদায় করতে হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও এর অঙ্গসংগঠনকে দায়িত্ব নিতে হবে।’
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বাকশাল করে এই আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। এই আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করে গণতন্ত্রকে চূড়ান্তভাবে হত্যা করেছে। তাই আওয়ামী লীগ এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারবে না। এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ফিরিয়ে দিতে পারবে না। এখন একমাত্র সমাধানের রাস্তা হচ্ছে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা, এদেশের মানুষকে রক্ষা করা। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সৃষ্টি করাকে আমরা দায়িত্ব মনে করি। আমরা অচিরেই এদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি গণআন্দোলন সৃষ্টি করব। আর এই গণআন্দোলনের মুখে সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হবে। তাই সে অবস্থায় যাওয়ার আগে আমি এই মানববন্ধন থেকে সরকারকে আহ্বান করব অনতিবিলম্বে আপনারা পদত্যাগ করুন। তা না হলে এদেশের জনগণ বাধ্য হবে আপনাদের বিদায় করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে। ভোটের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে। আর সেই জনগণের সরকার কৃষকের পণ্যের ন্যায্যমূল্য ফিরিয়ে দিবে। সেই সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমিয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে রাখবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘এই সরকারকে মানুষ চায় না। কারণ এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে যত দ্রুত বিদায় করা যাবে, তত দ্রুত আমরা যে সমস্যাগুলোর কথা বলছি তা সমাধান করা সম্ভব। তাই আমরা এই মানববন্ধন থেকে দাবি করতে চাই, অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সারা দেশের মানুষ দাবি করছে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। সেই সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘এই সরকারের মুখে নির্বাচনের কথা মানায় না। তারা নির্বাচনের সব ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণের আজ ভোটের প্রতি আস্থা নাই। কারণ জনগণ ভোট দিতে পারে না। এই সরকারের অধীনে ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না, হবে না। তাই জনগণ চায় নির্বাচনকালীন একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। এটার কোনো বিকল্প নেই।’
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চলনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও ফজলুল হক মিলন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, যুবদলের সহ-সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।