নরসিংদীতে র্যাবের অভিযানে অস্ত্র জব্দ, গ্রেপ্তার ১২
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার অশান্ত চরাঞ্চলে শান্তি ফেরাতে আলোকবালী, মির্জারচর ও নিলক্ষাচরে অভিযান চালিয়েছে র্যাব-১১। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ দেশীয় অস্ত্র জব্দ এবং ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার ভোরে এ অভিযান চালানো হয়।
আজ দুপুরে র্যাব ১১-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান র্যাবের নারায়ণগঞ্জ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
র্যাব জানায়, নরসিংদী জেলায় সংঘটিত হত্যা, মাদক, চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, অস্ত্রধারীদের সন্ত্রাস, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে র্যাবের অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলে গত দুই সপ্তাহে নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ছয়জনের। বহু সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছে। সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাবের অভিযান জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা প্রতিরোধে মির্জারচর, আলোকবালী ও নিলক্ষাচরাঞ্চলে র্যাব-১১ নরসিংদীর একটি চৌকস দল আজ ভোরে চরাঞ্চলে অভিযান চালায়। খবর পেয়ে নিলক্ষা ও আলোকবালী চরাঞ্চলের সন্ত্রাসীরা আত্মগোপন করে। পরে জেলার রায়পুরার মির্জাচর এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় অভিযানে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে স্বাধীন বাহিনীর প্রধান স্বাধীনসহ দলের অন্য সদস্যরা র্যাবকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ সময় জানমাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে র্যাবও পাল্টাগুলি চালায়। পরে তাদের চারপাশ থেকে ঘেরাও দিয়ে হত্যাসহ অসংখ্য মামলার পলাতক আসামি স্বাধীন বাহিনীর প্রধান স্বাধীনসহ তার বাহিনীর ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন আ. সাত্তার, স্বাধীন (৫৪), কালন (৩০), নাজির হোসেন (৩৫), বিল্লাহ হোসেন (৩৫), জুয়েল (২৫), আবুল হোসেন (৫৫), মো. আনিস (২৬), খোকন মিয়া (৩২), মিজানুর রহমান (৪৫), আইয়ুব আলী (৪৪), নাসির (৩০) ও লিটন (২০)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি রিভলবার, দুই রাউন্ড রিভলবারের গুলি, একটি ইউএসের তৈরি শটগান, ২৯ রাউন্ড শটগানের গুলি, একটি ওয়ান শুটার গান, ছয়টি রামদা, একটি ছোরা, একটি তলোয়ার, একটি কিরিচ, দুটি সামুরাই, একটি চাপাতি, তিনটি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, নগদ আট হাজার ৮৮০ টাকা এবং আটটি মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়।
র্যাব-১১ আরও জানায়, স্বাধীন বাহিনীর সদস্যরা চাঁদাবাজি, ডাকাতি, অগ্নিসংযোগ, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হত্যাসহ ব্যাপক সহিংসতা করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। প্রাথামিক অনুসন্ধানে জানা যায়, যে, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা এলাকার চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। দীর্ঘদিন তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। তার বিরুদ্ধে সদর, রায়পুরা থানাসহ অন্যান্য থানায় খুন, হত্যাচেষ্টা, মাদক মামলাসহ অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।